জলকেলি উৎসব, মেতে উঠেছে কক্সবাজরের রাখাইন পল্লী

পর্যটন নগরী কক্সবাজারে চলছে রাখাইন সম্প্রদায়ের তিন দিনব্যাপী ‘সাংগ্রেং পোয়ে’ বা জলকেলি উৎসব। আজ এই উৎসবের ২য় দিন।  এদিনেও সাংগ্রেংএ মাতোয়ারা রাখাইন তারুন্য। ১৭ এপ্রিল ১৩৮৬ রাখাইন বর্ষকে সানন্দে বরণ করে নেয় সবাই। আর বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের রাখাইন পল্লী এখন উৎসবের তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ছিল উৎসবের দ্বিতীয় দিন। এই দিনে আনন্দ উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা ছিল রাখাইন পল্লীর তরুণ -তরুণীরা। তাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উৎসবের বর্ণিল আবহে শরীক হয় স্থানীয়সহ পর্যটকরাও। এতে ফুটে উঠে অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।

একই দিন বিকেলে শহরের জলকেলি উৎসবের প্যান্ডেল পরিদর্শন করেন  জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান। এসময় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক মং ছেং লার সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, এই চিরায়ত  ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার কক্সবাজার শহরের রাখাইন পাড়ার জল উৎসব পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি  প্রতিটি জল উৎসব আয়োজকদের ব্যক্তিগতভাবে দুই লক্ষেরও বেশি টাকা অনুদান দেন। তিনি বলেন, রাখাইনদের এ উৎসব যেনো সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয় সে লক্ষ্যে কাজ করছে পৌরসভা। তিনি বলেন, ছোটোবেলা থেকে এখনও রাখাইন সম্প্রদায়ের সুখে দুঃখে সাথে আছি।

জলকেলির প্যান্ডেলগুলো ঘুুরে দেখা যায়, শহরের টেকপাড়া, হাঙর পাড়া, বার্মিজ স্কুল এলাকা, পূর্ব—পশ্চিম মাছ বাজার, , ক্যাং পাড়া ও বৈদ্যঘোনাস্থ থংরো পাড়ায় দুপুর ১ টা থেকে বাদ্য বাজনার তালে তালে দলবেঁধে ছুটে যায় রাখাইন তরুণরা। আর প্যান্ডেলে আগে থেকে অপেক্ষামান তরুণীরা এক অপরকে পানি ছিটিয়ে পুরোনো বছরের হতাশা দূর করে নব আলোকে পথ চলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে। ১৯ এপ্রিল জলকেলি উৎসবের সমাপনী দিন।

শহরছাড়াও মহেশখালী, টেকনাফ, হ্নীলা চৌধুরী পাড়া, রামু, পানিরছড়া, চকরিয়া, হারবাং, মানিক পুরসহ রাখাইন অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সপ্তাহ জুড়ে রাখাইন নববর্ষ পালনে নানা অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে।

কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক মং ছেন হ্লা বলেন, ‘আধিকাল থেকে রাখাইন নববর্ষ উপলক্ষে সামাজিকভাবে এই উৎসব পালন করে আসছি। এবারও আনন্দ—উল্লাসে নতুন বছরকে বরণ করছে সবাই। আমরা একে অপরের গায়ে মঙ্গল জল ছিটানোর মধ্য দিয়ে পুরনো দিনের সব ব্যথা, বেদনা, হিংসা বিদ্বেষ ভুলে নতুনভাবে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি।’

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘রাখাইনদের জলকেলি উৎসবে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে কোন অঘটন না হয়।

১৭ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া রাখাইনদের এই জলকেলী উৎসব শেষ হবে ১৯ এপ্রিল শুক্রবার।

শেয়ার করুন:

Recommended For You