কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় পর্যটকবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনায় আটজন নিখোঁজের দ্বিতীয় দিনে দুইজন, তৃতীয় দিনে তিনজন ও সর্বশেষ চতুর্থ দিনে বাকী তিনজনের মরদেহ নদীতে ভাসমান অবস্থায় নৌ পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ ও ফায়ার সার্ভিস যৌথ অভিযানে সবগুলো মরদেহ উদ্ধার করেছে।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ অনুসরণ করুন
সোমবার (২৫ মার্চ) সকালে মেঘনা নদী থেকে নিখোঁজ হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবল সোহেল রানা ও তার শিশু ছেলে রায়সুলসহ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার মানিকখালী গ্রামের বেলন দের মরদেহ উদ্ধারের মাধ্যমে নৌকা ডুবির উদ্ধার অভিযানের সমাপ্ত হয়। এ ঘটনায় ৮জন নিখোঁজসহ মোট ৯জনের মরদেহ উদ্ধার করা করা হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভৈরব নৌ-পুলিশ ইউনিটের অফিসার ইনচার্জ কেএম মনিরুজ্জামান চৌধুরী। এদিকে আজ বাদ যোহর নামাজের পর পুলিশ সদস্য সোহেল রানা ও তার ছেলে রাইসুলের নামাজে জানাজা ভৈরব হাইওয়ে থানা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে সোহেল রানা ও তার সন্তান রায়সুলের মৃতদেহ তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বার ফতেহাবাদে নিয়ে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানান স্বজনরা।
আরও পড়ুন ভৈরবে নৌকা ডুবি : পুলিশ কনস্টেবলসহ দুই জনের মরদেহ উদ্ধার
পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানার বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব ফতেহাবাদ গ্রামে। তার বাবা সাবেক সেনা সদস্য আবদুল আলিম। তিনি ভৈরব হাইওয়ে থানায় পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি করতেন। ২০১১ সালে পুলিশ তিনি কনস্টেবল পদে যোগদেন। এর আগে রোববার (২৪ মার্চ) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে মেঘনা নদী থেকে পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানার মেয়ে মাহমুদা সুলতানা (৭) ঝন্টু দে’র স্ত্রী রুপা দে (৩০), নরসিংদির বেলাব থানার দড়িকান্দি গ্রামের দারু মিয়ার মেয়ে কলেজ শিক্ষার্থী আনিকা আক্তার (১৮) মরদেহ উদ্ধার করা হয় এবং ডুবে যায় ট্রলারটিকে উদ্ধার করে পাড়ে নিয়ে আসা হয়। এঘটনায় ভৈরবসহ নিহতের গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে।
আরও পড়ুন হাতের তালুতে সুইসাইড নোট লিখে গৃহবধূর আত্মহত্যা
এই বিষয়ে ভৈরব নৌ-থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কেএম মনিরুজ্জামান চৌধুরী জানান, মেঘনা নদীতে নৌকা ডুবির ঘটনায় ৮ জন নিখোঁজের মধ্যে সোমবার সর্বশেষ পুলিশ সদস্য সোহেল রানা ও তার শিশু ছেলে রায়সুল ও বেলন দের মরদেহ উদ্ধারের মাধ্যমে নিখোঁজ ৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করার মাধ্যমে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৯জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনার বিষয়ে কেউ যদি নিখোঁজের কোন অভিযোগ করে তাহলে উদ্ধার অভিযান চালানো হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২২মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে মেঘনা নদীর রেলসেতু এলাকা থেকে নৌকা নিয়ে ভ্রমণে বের হন ১৬ জন যাত্রী। কিছুদূর যেতেই এক যাত্রীর অনুরোধে মাঝি হাল ছেড়ে ছবি তুলতে গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বালুবাহী বাল্কহেড নৌকাকে ধাক্কা দিলে সঙ্গে সঙ্গেই নৌকাটি ডুবে যায়। এসময় কয়েকজন সাঁতরে তীরে ওঠেন। পরে খবর পেয়ে নৌপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের স্পিড বোটে এসে এক নারীর মরদেহসহ আটজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।