সাকিবের ‘তৃতীয় যাত্রায়’ সাদা পোশাকে নবজাগরণের প্রত্যাশা

আজ বাংলাদেশ-উইন্ডিজ দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট। এর মধ্য দিয়ে টেস্ট দলের অধিনায়ন হিসেবে সাকিবের তৃতীয় অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। অধিনায়ক সাকিবের প্রত্যাবর্তনে টেস্টেও নতুন করে স্বপ্ন দেখতে পারে বাংলাদেশ। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজের নামকরণ করা হয়েছে- পদ্মা ব্রিজ ড্রিম ফুলফিলড ফ্রেন্ডশিপ টেস্ট সিরিজ। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ সাকিবের উপর আস্থা রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। দর্শকদেরও প্রত্যাশা মমিনুল যেটা পারেনি সাকিব সেটা করে দেখাবে।

২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই আত্মপ্রকাশ ঘটে অধিনায়ক সাকিবের। মাশরাফি বিন মুর্তজা চোট নিয়ে ছিটকে যাওয়ায় সেন্ট ভিনসেন্টের কিংস টাউন টেস্টের রাজা সেজেছিলেন তিনি। অফিসিয়ালি ওই টেস্টে মাশরাফি অধিনায়ক হলেও বাঁহাতি অলরাউন্ডারের হাতে ছিল মাঠের নেতৃত্ব। গ্রানাডায় সিরিজ নির্ধারণী টেস্ট দিয়ে অফিসিয়ালি অধিনায়ক হন সাকিব। যে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ও ছিলেন তিনি। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে আজ থেকে অনুষ্ঠেয় টেস্টেও দুই ভূমিকাতেই সেই সোনালি সিরিজের সাকিবকে দেখতে চাইবে দল। অলরাউন্ডার সাকিবের কাছে সমর্থকদের চাওয়া থাকবে সেরা পারফরম্যান্স আর অধিনায়কত্বে ‘কারিশমা’। বাংলাদেশের এই ক্রিকেটের সংস্কৃতি সাকিবের পরিচিত। আগের দু’বারের নেতৃত্ব এবং খেলার অভিজ্ঞতা মিলিয়ে এবার আরও পরিণত তিনি। স্বাভাবিকভাবেই সব্যসাচী এ ক্রিকেটারের চেষ্টা থাকবে নিজে ভালো খেলার পাশাপাশি সতীর্থদের কাছ থেকে সেরাটা আদায় করে নেওয়া।

২০১৮ সালে অধিনায়কত্বের দ্বিতীয় ইনিংসের সূচনাতেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেয়েছিলেন সাকিব। যে মিশনে মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখে ফেলেন তিনি। টেস্টে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন ৪৩ রানের স্কোরটি তাঁর নেতৃত্বেই। তিন দিনেই ম্যাচটি ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। স্যাবাইনা পার্কে পরের টেস্টেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারেননি ১৪৯ আর ১৬৮ রানে অলআউট হওয়ায়। এবারের সিরিজটি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের খেলা। যেখান থেকে পয়েন্ট পেতে চাইবে দল। সেটা করতে হলে অতীতের দুঃস্মৃতি মুছে ফেলে ভালো খেলার প্রত্যয় নিতে হবে টাইগারদের। তবে এবারের সফরে বাংলাদেশ দলে অনেক পরিবর্তন। পেস বোলিং ইউনিটে শক্তি বেড়েছে। মুস্তাফিজুর রহমান, এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ, রেজাউর রহমান রাজদের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায়। স্পিন বিভাগে সাকিবের সঙ্গে থাকছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। যে কিনা ইনজুরির কারণে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজে খেলতে পারেননি।

মিরাজের প্রত্যাবর্তন যেমন স্বস্তির, তেমনি লঙ্কানদের বিপক্ষে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মুশফিকুর রহিমকে না পাওয়ার আক্ষেপও থাকছে। হজ পালন করার জন্য উইন্ডিজ সফর থেকে ছুটি নিয়েছেন উইকেটরক্ষক এ ব্যাটার। মিডলঅর্ডারে মুশফিকের ঘাটতি পুষিয়ে নিতে যাকে বিবেচনা করা হচ্ছিল, সেই ইয়াসির রাব্বি কোমরের চোট নিয়ে সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন। উইকেটরক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান সোহানই হয়তো খেলবেন। ২০১৮ সালের সফরে তিনিই ছিলেন উইকেটরক্ষকের ভূমিকায়। ইনজুরির কারণে তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম টেস্ট সিরিজের দলে না থাকায় মুস্তাফিজুর রহমান খেলছেন। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে উইন্ডিজের বিপক্ষেই শেষ টেস্ট খেলেছিলেন তিনি। ১৬ মাস পর লাল বলের খেলায় ফিরলেও উইন্ডিজ কন্ডিশনে ভালো করতে পারেন বাঁহাতি এ পেসার। তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে তিন উইকেট নিয়ে সে সম্ভাবনার নমুনাও দেখিয়েছেন কিছুটা। এবাদত হোসেনের বোলিংও ভালো হয়েছে। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রেসিডেন্ট একাদশের বিপক্ষে খেলা ম্যাচটিতে ব্যাটিং প্র্যাকটিসটা সেভাবে হয়নি। ওপেনার তামিম ইকবাল অপরাজিত ১৬২ রান আর নাজমুল হোসেন শান্ত হাফ সেঞ্চুরি করলেও বাকিরা ব্যর্থ। ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়, মিডলঅর্ডার ব্যাটার মুমিনুল হক, লিটন কুমার রান পাননি। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো গা গরমের ম্যাচ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও বাস্তবতা হতাশার। যেটা ঝেড়ে ফেলে নবরূপে জেগে উঠতে হবে টাইগারদের।

ডব্লিউজি/এএইচ

শেয়ার করুন:

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *