দেশের অর্থনীতি আর খারাপ হবে না, আশা গর্ভনরের

দেশের অর্থনীতি বর্তমানে যে অবস্থায় রয়েছে এর চেয়ে আর খারাপ হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেন,রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যাপ্তি, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সুদহার বাড়ানোর আগ্রাসী কার্যক্রম এবং চীনের কোভিড পরিস্থিতি। এ তিন চ্যালেঞ্জের পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয়, তাহলেও দেশের অর্থনীতির বর্তমান যে অবস্থা আছে, তার চেয়ে খারাপ হবে না। এখন যে পরিস্থিতি রয়েছে , এর চেয়ে আর খারাপ হবে না। আমাদের অর্থনীতির যে সহনশীলতা, সেটি অত্যন্ত গভীর। যেকোনো একটি ধাক্কায় বাংলাদেশের অর্থনীতি পড়ে যাবে না।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে ঘুরেফিরে আলোচনায় ছিল ব্যাংক খাতের নানা অব্যবস্থাপনা। বিশেষ গ্রুপ ও ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ সহায়তার বিষয়টিও ঘুরেফিরে এসেছে আলোচনায়। এছাড়া ডলার সংকটের পাশাপাশি তারল্যসংকট, আমানত কমে যাওয়া নিয়েও গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সামনে নানা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন সাংবাদিকেরা।

নতুন মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে তিনটি চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করা হয়েছে সে বিষয়ে গভর্নর বলেন, আমরা চ্যালেঞ্জিং সময় অতিক্রম করছি। মুদ্রানীতি প্রণয়নে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে…। মুদ্রানীতি প্রণয়নে উন্নয়ন সহযোগী, অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও সাবেক গভর্নরদের মতামত নেওয়া হয়েছে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, যত দ্রুত এ তিন চ্যালেঞ্জের সমাধান হবে, বাংলাদেশের অর্থনীতিও তত দ্রুত বাউন্স করবে। স্বল্পমেয়াদে আমাদের দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকবে। আমরা আশা করি, ভালো দিন শিগগিরই আসবে।

আপনি যোগ দিয়ে বলেছিলেন, ডলারের সংকট জানুয়ারিতে শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু এখনো সংকট কাটেনি। এ সংকট কবে কাটবে এমন প্রশ্নের জবাবে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, আমি যোগ দেওয়ার পর আমদানি কমাতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। বেশি দামে ঋণপত্র যেন খোলা না হয়, সে জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। এসব পদক্ষেপের ফলে আমদানি কমেছে। এখন প্রতি মাসে আমদানিতে যে খরচ হচ্ছে, রপ্তানি আয় ও প্রবাসী তার চেয়ে বেশি। তবে আগের আমদানি দায় এখন পরিশোধ করতে হচ্ছে…। এ জন্য ডলারের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। এছাড়া রাশিয়া – ইউক্রেন যুদ্ধ , যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদ বৃদ্ধি ও চীনের করোনার ওপর নির্ভর করছে ডলার – সংকট সুরাহার বিষয়টি।

ডলার সংকটে মুনাফা করা ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পর কেন তা তুলে নেওয়া হলো জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, ডলার সংকটের সুযোগ নিয়ে ১২ টি ব্যাংক ১ হাজার ৩৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। এসব ব্যাংকের সেই মুনাফার অর্ধেক সামাজিক দায়বদ্ধতা ( সিএসআর ) খাতে ব্যবহার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে সরকারের চলতি হিসাবের ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থবছর শেষে এ ঘাটতি ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে থামবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ধারাবাহিকভাবে পতন হচ্ছে…। ৮ জানুয়ারি রিজার্ভের গ্রস পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। তবে চলতি অর্থবছর শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ৩৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ডব্লিউজি/এআর

শেয়ার করুন:

Recommended For You