তীব্র তাপপ্রবাহে ইরি-বোরো ধান কাটতে পারছে না চাষিরা

বৈশাখ মাসের প্রায় মাজামাঝি সময় তাপমাত্রা যেন ও কোনো ভাবেই কমছে না। তবে কোন ভাবেই দেখা নেই বৃষ্টির। সকাল থেকে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা।

দেশজুড়ে চলা গত কয়েক দিনের তীব্র তাপ প্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নড়াইলের তিনটি উপজেলার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা। গরমে দিশাহারা হয়ে পড়েছে মাঠে থাকা কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষ। বিশেষ করে এ সময় চরম বিপাকে পড়েছেন এ জেলার ইরি-বোরো ধান চাষিরা। তীব্র গরমে মাঠে ধান কাটার শ্রমিক সংকট, আর শ্রমিক পাওয়া গেলেও তাদের বেশি টাকা দিতে হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষ হয়েছে ৫০ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে ২০ শতাংশ জমির ইরি-বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে।

ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ অনুসরণ করুন

বৃহস্পতিবার (২৫এপ্রিল) সকালে সরেজমিন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, গরমের কারণে ভোর থেকেই ইরি-বোরো ধান কাটা শুরু করেছে অনেক চাষি। তবে, দুপুর ১২টার পর তীব্র গরমে মাঠে কাজ করতে পারছেন না কৃষকরা। কিছু সময় কাজ করলেই হাঁপিয়ে উঠছেন। ঘামে পরনের কাপড় ভিজে একাকার। কাজের মাঝে বারবার বিশ্রাম নিতে হচ্ছে। এতে কাজের গতি কমে যাচ্ছে। গরমের কারণে ধান কাটা শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। আর শ্রমিক পাওয়া গেলেও তাদের পারিশ্রমিক বেশি দিতে হচ্ছে। এদিকে ভারী বৃষ্টিপাত হলে ইরি-বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। তাই তীব্র গরম কে সঙ্গে নিয়েই ধান কাটছেন কৃষকরা।

লোহাগড়া উপজেলার নারানদিয়া গ্রামের শংকর পাল বলেন, শ্রীমক পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই নিজে নিজেই ধান কাটছি। ভারী বৃষ্টিপাত হলেও ধান তলিয়ে যেতে পারে এ জন্য কিছু কাচা থাকলে কেটে ঘরে তুলতে হবে। গরমে শ্রমজীবী মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে কথা হয় লোহাগড়া হাসপাতালের ডা. আবদুল্লাহ আল-মামুন তিনি বলেন, গরমে শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। এজন্য প্রত্যেককে অবশ্যই সঙ্গ পানি রাখা উচিত। গরমে শরীরে যাতে পানির ঘাটতি দেখা না দেয় এজন্য পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।

নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আশেক পারভেজ বলেন, বৃষ্টিহীন পরিবেশ থাকলে কৃষকের ধান কাটা থেকে শুরু করে পরবর্তী ধাপে যেতে সহজ হয়। এজন্য এই পরিবেশকে কৃষক ইতিবাচক ভাবেই নেয়। কিন্তু তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে কৃষকদের দুপুরের সময়ে মাঠে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।

শেয়ার করুন:

Recommended For You