
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের কাউন্সিলিংয়ের পর কোটা আন্দোলন সংক্রান্ত সকল কর্মসূচি প্রত্যাহারের লিখিত ঘোষণা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় শিক্ষার্থী।
সোমবার (২৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কার্যালয়ের সভাকক্ষে প্রশাসনের সাথে নয়জন শিক্ষার্থীর এই দল অংশ নেন। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের কেও না জানিয়ে উক্ত বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে মূল সমন্বয়কদের দল।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ উপস্থিত ছিলেন। উক্ত ঘোষণা শিক্ষার্থীদের হলেও দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্দেশে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের নিকট নয়জন শিক্ষার্থীর বিবৃতি তুলে দেয় বলে জানা গেছে।

সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/latest/
বিবৃতি সূত্রে জানা যায়, বৈঠক থেকে নয়জন শিক্ষার্থী পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে সব ধরণের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে একটি বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন। পরে শর্ত জুড়ে দিয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, কমিশন গঠন করে সকল কোটাধারীদের মধ্য থেকে প্রতিনিধি নিতে হবে। পরবর্তীতে যদি পরিবর্তন প্রয়োজন হয় তাহলে প্রতিনিধি মতামতের ভিত্তিতে পরিবর্তন বা সংস্কার করতে পারবে। এ ছাড়াও আরোও আমাদের যে নয় দফা দাবি আছে তা মেনে নিয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে যদি শিক্ষার্থী সমাজ একাত্মতা পোষণ না করে তাহলে সেই দায়ভার আজকে মিটিংয়ের সদস্যরা নিবে না। শিক্ষার্থী সমাজের নয় দফা অব্যাহত থাকবে। এবং পরবর্তীতে আরো আলোচনার সুযোগ থাকবে।
বৈঠক থেকে শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা লিখিত দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো – আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে গ্রেপ্তার, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও বিভিন্নভাবে হেনস্তা না করে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, কোটা আন্দোলনে শহীদদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা ও বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং অতিদ্রুত হলসমূহ খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের হলে আবাসন নিশ্চিত করা।
প্রতিনিধিত্ব করা নয়জন শিক্ষার্থী হলেন, ইংরেজি বিভাগের আব্দুর রহমান, ইশতিয়াক আহমেদ; ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর আল যুবাইর তামিম, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী এনামুল হক, অর্থনীতি বিভাগের তন্ময় কুমার সাহা, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বাধন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের আরাফাত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের জুবায়ের এবং সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ।
অন্যদিকে বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের কেও না উল্লেখ করে এ বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে মূল সমন্বয়কেরা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক সায়েম আহমেদ এ বিষয়ে কথা বলেন গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে। তিনি বলেন, প্রশাসন গোয়েন্দা সংস্থার ভয়ভীতি দেখিয়ে বিবৃতিতে শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর করিয়েছে। তারপরো যারা স্বাক্ষর করেছে তারা আন্দোলন সংশ্লিষ্ট কেউ না। সেখানে ছাত্রলীগের পদধারী নেতাও রয়েছে। আমরা কোনমতেই শহীদদের রক্তের সাথে আপস করছি না। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া অব্দি আন্দোলন চলবে।
এ বিষয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, যারা স্বাক্ষর করেছে তারা আমাদেরও পরিচিতও নানা। আমরা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মেনে ও জেলা শহরের সাথে সমন্বয় করে আমাদের কর্মসূচী চলবে।
প্রসঙ্গত, সোমবার (২৯ জুলাই) বিকালে সমাবেশের উদ্দেশ্যে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে কুষ্টিয়া থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৩০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক জুবায়ের এ তথ্য জানিয়েছেন। কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাসসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।