কাউন্সিলরের প্রত্যায়ন, ভোটার হতে এসে ধরা রোহিঙ্গা যুবক

এনআইডি কার্ডের ছবি তুলতে এসে কক্সবাজার নির্বাচন অফিস এলাকা থেকে হাতেনাতে ধরা পড়েন এক রোহিঙ্গা যুবক। ২ লাখ টাকার বিনিময়ে এনআইডি কার্ডটি করতে দিয়েছেন বলে জানান ওই রোহিঙ্গা যুবক জাহেদ উল্লাহ।
বুধবার (৫ জুন) আইডি কার্ডের ছবি তুলতে এসে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওসমান সরওয়ার টিপু তাকে হাতে-নাতে ধরে পৌরসভার হলরুমে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন।
এনআইডি কার্ডের জন্য জমা দেওয়া ফাইল দেখে জানা যায়, ভোটার অন্তর্ভুক্তির প্রত্যয়ন পত্র ও ভূমিহীন প্রত্যয়ন দিয়েছেন  ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহেদা আক্তার। ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে সুপারিশ পত্রে স্বাক্ষর  করেছেন কউন্সিলর জাহেদা আক্তার ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওসমান সরওয়ার টিপু।
তবে স্বাক্ষর জালিয়াতি করার অভিযোগ এনে কাউন্সিলর টিপু বলেন, ওই তিন ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর জাহেদা আকতারের সীল,স্বাক্ষর সম্বলিত প্রত্যয়নে ওই রোহিঙ্গাকে এনআইডি কার্ড ইস্যু করতে রোহিঙ্গা নয় মর্মে প্রত্যয়ন দেয়া হয়েছে।  শুধু তাই নয় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবে উপস্থাপন করে আমার ও ওমর সিদ্দিক লালুর স্বাক্ষর জালিয়াতি করেছে। আর এ কাজটি করেছে জাহেদার পিএস মফিজ। কাউন্সিলর জাহেদাই তাকে এসব কাজের সুযোগ করে দিয়েছে বলে জানান।
তিনি আরও জানান, মফিজ সিন্ডিকেটের সহযোগী কম্পিউটার ম্যান নেজাম তার নিজের দাদা – দাদি, চাচা-চাচী, ফুফা-ফুফীর এনআইডি কার্ড ওই রোহিঙ্গার স্বজনদের এনআইডি হিসেবে ব্যবহার করে ফাইল জমা দিয়েছেন এবং সীল স্বাক্ষর ব্যবহার করেছেন জাহেদার পিএস মফিজ।সে জাহেদার মাধ্যমে এমন কাজ করার সুযোগ পেয়েছে।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়র সালাউদ্দিন সেতু জানান, মফিজ জাহেদা আক্তারের পিএস। শুধুই মফিজ নয় এরকম অসংখ্য  লোক পৌরসভায় রয়েছে। তাদেরকে খোঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, এখানে প্যানেল মেয়র -২ ওমর সিদ্দিক লালুর স্বাক্ষরটিও জালিয়াতি করা হয়েছে।  তিনি বর্তমানে হজ করতে সৌদি আরব অবস্থান করছেন। কক্সবাজার পৌরসভা এখন দালালের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। তাদের টাকা না দিলে সেবা পাচ্ছে না জনগণ। দালালদের নির্মুলে তিনি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
নিজেদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে এনআইডি কার্ড করে দেওয়ার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এবং এটির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান তারা।
দুই লাখ টাকার বিনিময়ে এনআইডি কার্ড করার বিষয়ে রোহিঙ্গা জাহেদ উল্লাহ বলেন, দুই লাখ টাকার কন্ট্রাক্ট হয়েছে নেজাম ও মফিজের সাথে। এক লাখ টাকা দিয়েছি। বাকি এক লাখ টাকা কার্ড হাতে পেলে দেওয়ার কথা ছিলো।
এদিকে পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়র সালাউদ্দিন সেতু বলেন, আইনের বাইরে তিনি কাউকে কোনো কাজ করার নির্দেশনা দেননি। এনআইডি বা অন্য যেকোনো সনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনে যা বলা আছে, কাউন্সিলরদের তা মেনে চলতে হবে।

এ বিষয়ে জানার জন্য  ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর জাহেদা আক্তারের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি তিনি।

Recommended For You