সাংবাদিককে পিটিয়ে পা ভেঙে দিলো সন্ত্রাসীরা, মোটরসাইকেল ও মুঠোফোন ছিনতাই

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় মানিক হোসেন (৪০) নামে স্থানীয় এক সাংবাদিককে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁকে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে উপজেলার পূঁইবিল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত মানিক হোসেন দৈনিক খোলা কাগজের ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। তিনি ভাঙ্গুড়া প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তাঁর দাবি, নকল দুধ তৈরিসংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করায় সন্ত্রাসীদের দিয়ে তাঁকে পেটানো হয়েছে।
আহত সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাঙ্গুড়া দুগ্ধ খামারসমৃদ্ধ উপজেলা। এখান থেকে কয়েক হাজার লিটার দুধ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। এ সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নকল ও ভেজাল দুধ তৈরি করে বাজারজাত করছিলেন।
সম্প্রতি ভেজাল দুধ তৈরির কিছু ভিডিও ফুটেজ ও তথ্য সাংবাদিক মানিকের কাছে আসে। তিনি এসব তথ্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই ভেজাল দুধ তৈরির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত হন বলে ওই সাংবাদিক দাবি করেন।
সাংবাদিক মানিক হোসেন বলেন, ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই তিনি হুমকি পাচ্ছিলেন। আজ সকালে মোটরসাইকেলে পূঁইবিল এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা তাঁর গতিরোধ করে বেদম পিটুনি দেয়।
একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা শুধু মেরেই ক্ষান্ত হয়নি। আমার মোটরসাইকেল ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।’
ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ইকরামুন নাহার বলেন, এক্স-রে প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ওই সাংবাদিকের পায়ের হাড় ভেঙে সরে গেছে। ভাঙ্গুড়ায় পরিপূর্ণ চিকিৎসা সম্ভব না হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। এ ঘটনায় আহত সাংবাদিককে থানায় মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি মামলা করলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভেজাল দুধ তৈরির বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Recommended For You