
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে সদ্য ভূমিষ্ট কন্যা সন্তানকে ২০ হাজার টাকায় দত্তক দেয়া মোছাঃ মুক্তি খাতুনকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা প্রশাসন। শনিবার (১৭ফেব্রুয়ারী) রাতে মুক্তি খাতুনকে বাবা মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
মুক্তি উপজেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়ন গনাইরকুটি গ্রামের পাথর শ্রমিক শফিকুল মরিয়ম দম্পতির মেয়ে। স্থানীয়রা জানান, শফিক ইসলাম একজন পাথর ভাঙা শ্রমিক।নিজের অর্থ সম্পদ বলতে কিছু নেই। অন্যের বাড়িতে বসবাস করেন। ১৩ বছর আগে নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের খাষ ইউনিয়নের মরিয়ম বেগমের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পরের বছর তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তান আসে নাম রাখেন মফিজুল ইসলাম (৯) পরের বছর দ্বিতীয় সন্তানের মেয়ে জান্নাত (৭) জন্ম হয়।
এর পর মরিয়ম টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তৃতীয় সন্তান মেয়ের জন্ম হলে প্রতিবেশি আকলিমার মাধ্যমে অপরিচিত মানুষের কাছে তুলে দেন। ৪র্থ বছরে আরেকটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হলে তাকে ঘরে রেখে দিলেও এখন পর্যন্ত কোন নাম রাখে নাই তারা। এর পর পঞ্চম সন্তান মুক্তি জন্ম নেয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে দিয়ে দেন প্রতিবেশী মামাতো বোন নিঃসন্তান লাকী বেগম ও আলমগীর দম্পত্বির কাছে। পরে বিষয়টি গণ মাধ্যমে প্রকাশ হলে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোঃ গোলাম ফেরদৌসের সহযোগীতায় মুক্তিকে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
শফিকুল ইসলাম বলেন, টাকা নিয়ে আমার সন্তানকে আমি অন্যের কাছে বিক্রি করি নাই। অভাবের সংসারে এতগুলো সন্তানের ভরণ পোষণ করতে পারবো না বলে দত্তক দিয়েছি। যাতে আমার সন্তানরা অন্যের হাতে ভালো থাকে। বুকের ধনকে অন্যর হাতে তুলে দিয়েছি। এর আগেও আরেক মেয়েকেও অন্যের কাছে দিয়েছি। সেটার খোঁজ খবর জানিনা। বলতে পারেন অভাবের কারণেই এই পথে হাটা। এসব কাজ করা ঠিক হয় নাই। আর এমন ঘটনা হবে না বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, বাচ্চাটিকে দত্তক দেওয়ার খবর পাওয়ার পর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে তার পরিবারের নিকট ফেরত দেওয়া হয়েছে। ওই দম্পতি এরকম আরো একটি ঘটনা ঘটিয়েছেন তাই তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অবগত করা হয়েছে যাতে তারা এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটায়। এছাড়া পরিবারটিকে সরকারি সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয়।