
গভীর রাতে দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে পুড়ে নিঃস্ব এক প্রবাসী ও তার পরিবার। তবে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শত্রুপক্ষ পরিকল্পিতভাবে ঘরে আগুন দিয়েছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগী ওই প্রবাস ফেরত নারী ও পরিবার। আগুনে পুড়ে নগদ টাকা, স্বর্নলংকার ও মালামালসহ প্রায় পঁয়ত্রিশ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়রা। এ ঘটনার সঠিক বিচার চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
বুধবার (১৪ই ফেব্রুয়ারী ভোররাত আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার ৪নম্বর কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের জাকিরতবক গ্রামের বারেক হাওলাদারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। বারেক হাওলাদার জাকিরতবক গ্রামের মৃত কাসেম হাওলাদারের ছেলে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দৈনন্দিন কাজ শেষ করে ভুক্তভোগী বারেক হাওলাদার, তার প্রবাস ফেরত মেয়ে মানসুরা ও তার পরিবারের লোকজন ঘুমিয়ে পড়লে রাত আড়াইটার দিকে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে ঘরে আগুন জ্বলতে দেখেন তারা। এসময় ডাক চিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ঘরের পূর্ব পাশে চৌকাঠের নিচে দুর্বৃত্তের দেওয়া শুকনো খড় দিয়ে আগুন লাগানোর উৎপত্তির স্থল দেখতে পান। এলাকার শতাধিক লোকজন অনেক চেষ্টা করেও আগুন নিবারন করতে পারেনি। বরগুনা ফায়ার সার্ভিসে ফোন করলে স্থানীয় কেওড়াবুনিয়া নামক সংযোগ ব্রিজের এ্যাপ্রোজ সড়কের কাজ সম্পূর্ণ নির্মাণ না হওয়ায় ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বারেক হাওলাদারের মেয়ে মানসুরা দীর্ঘ ১০বছর প্রবাসে থেকে কিছুদিন আগে দেশে ফিরেছেন।

ভুক্তভোগী বারেক হাওলাদার ও মানসুরা বলেন, খাবার খেয়ে আমরা রাত ১২ দিকে সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। রাত আড়াইটার দিকে ঘরের চারদিকে আগুন দেখতে পেয়ে সবাই বাহিরে আসি।
চৌকাঠের নিচে শুকনো খড় ও পেট্রোল ছিটিয়ে দিয়ে স্থানীয় চানমিয়া সর্দারের ছেলে জাকির ও তার সহযোগীর আমাদের ঘরে আগুন দিয়েছে। জাকিরের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ জমিজমা নিয়ে আমাদের বিরোধ চলে আসছিলো। এর আগে গভীর রাতে জাকিরকে আমাদের বাড়ীর আশেপাশে ঘোরাফেরা করতে দেখেছি। ঘটনার বিষয়ে আমরা জাকিরের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করবো।
তারা আরো বলেন, মানসুরার ছোট ভাইয়ের চাকুরির জন্য নগদ সাত লক্ষ টাকা আমাদের ঘরে রাখা ছিলো। এছাড়াও দুটি স্বর্নের বারে বিশ ভড়ি স্বর্ন, দশ ভড়ি রুপা, ল্যাপটপ, আইফোন ও ঘরের আনুষাঙ্গিক মালামালসহ প্রায় পঁয়ত্রিশ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা। পড়িহিত কাপড় ছাড়া আর কিছুই আমরা সাথে নিতে পারিনি, আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।
বরগুনা ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আহমেদ বলেন, আগুনের সংবাদ পেয়ে রওয়ানা করে যাওয়ার সময় স্থানীয় কেওড়াবুনিয়া ব্রীজের এ্যাপ্রোজ সড়কের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় বরগুনার ফায়ার সার্ভিসের টিম সেখানে পৌঁছাতে পারেনি, তবে মির্জাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসে ফোন দিলে তারা আসতে আসতে সম্পূর্ণ ঘরটি পুড়ে যায়।
বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ. কে. এম মিজানুর রহমান বলেন, অগ্নি কান্ডের খবর আমরা শুনেছি। বিষয়টি আমরা তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে থানায় এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। এদিকে অভিযুক্ত জাকিরের বাড়িতে গিয়েও জাকিরের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।