
গাজীপুর মহানগরীর লক্ষ্মীপুরা এলাকা থেকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার মোতাওয়াল্লিকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে উত্তরা পশ্চিম থানায় হেরোইনসহ আটক দেখিয়ে মাদক মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।
রোববার দুপুরে গাজীপুর প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী ফাতেমা আক্তার। এ সময় পিতা-মাতা, ৩ বছরের সন্তান এবং তার আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেফতার ওই মোতাওয়াল্লি গাজীপুর মহানগরীর লক্ষ্মীপুরা এলাকার হোসেন আলীর ছেলে সোলাইমান হোসেন তৌকি (২৬)।
ভুক্তভোগীর স্ত্রী লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার স্বামী তার পিতার ওয়াকফক করা হোসেনিয়া দাখিল মাদ্রাসার মোতাওয়াল্লি। আমাদের এলাকায় মাদকের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় কাউন্সিলর মাদক নির্মুলের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটির ১নং সদস্য হয়ে এলাকার লোকজন নিয়ে মানববন্ধন ও মাদক ব্যবসায়ীদের নাম প্রকাশ করে। এতে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীরা তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে। এরপর চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা হলে তারা আমার স্বামীর বিরুদ্ধে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। কিন্তু আমার স্বামী নির্দোষ হওয়ার স্বেচ্ছায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে। পরে আদালত তাকে জামিন দিয়ে দেন।
তিনি আরও বলেন, গত ২ আগস্ট রাতে আমার বাসার পাশেই একটি দোকানে বসা ছিলেন তিনি। এ সময় স্থানীয়দের সামনেই ৫-৬ ব্যক্তি মুখে কালো মাস্ক পরে অস্ত্র ধরে হাত-পা বেঁধে একটি হায়েস গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। ১ ঘণ্টা পর তার বন্ধু রিফাতকে ফোন দিয়ে বলে ডিবি পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে গেছে। পরে আমরা গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানা, ডিবি, সিআইডি এবং পিবিআইয়ে খোঁজ নিলে তাদের কাছে এমন কোনো তথ্য নেই বলে জানানো হয়।
এরপর ওইদিন দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে আমার স্বামীর বোন হামিদাকে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন দিয়ে বলা হয় উত্তরা পশ্চিম থানাধীন আব্দুল্লাহপুর ১নং সেক্টর থেকে ৩০০ গ্রাম হেরোইনসহ তাকে আটক করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ধারণা করছি এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে প্রভাবিত করে মিথ্যা মামলায় দিয়ে হয়রানি করার জন্য কারাগারে পাঠিয়েছে। আমি অসহায় নারী হয়ে ন্যায়বিচারের আশায় শিশুসন্তানকে নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমি আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার বরাবরও আবেদন করেছি। আমি একটি সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
আসামির আইনজীবী অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য আইনের উত্তরা পশ্চিম থানার মামলায় কারাগারে রয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আগে কোনো মাদকের মামলা ছিল না। তিনি কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শাহিন আলম বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। মামলার বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন মামলার বাদী।