
গৃহকর্ত্রীর বাচ্চার খাবার খেয়ে ফেলায় রাজধানীর কলাবাগানে শিশু গৃহকর্মী হেনাকে (১০) নির্যাতন করে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়ে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আশরাফ হোসেন বলেন, কলাবাগানে শিশু গৃহকর্মী হেনা গৃহকর্ত্রী সাথীর বাচ্চার খাবার মাঝে মধ্যে খেয়ে ফেলতো। আর এর জন্য নির্যাতন করে শিশু গৃহকর্মী হেনাকে হত্যা করে গৃহকর্ত্রী মোছা. সাথী পারভীন ডলি।
তিনি জানান, শিশুটির মৃত্যুর পর মোবাইল ফোন রেখে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরাফেরা করতে থাকে গৃহকর্ত্রী সাথী। পরে একসময় যশোরে চলে যায় সাথী।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, শিশুটিকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে নির্যাতন করা হয়েছে। বাচ্চার খাবার খাওয়ায় শিশুটিকে নির্যাতন করে হেনা। অনেক সময় তার বাচ্চার সঙ্গে খেলাধুলার সময় মারামারি হলে সেটা দেখেও নির্যাতন করতেন গৃহকর্ত্রী। আর নির্যাতনের মাত্রা এমন ছিল যে বিছানায় মলত্যাগ করে ফেলতো।
পুলিশ জানায়, হেনা ময়মনসিংহ মুক্তগাছা উপজেলা নন্দীবাড়ি গ্রামের মৃত হক মিয়া ও মৃত হাসিনা বেগমের মেয়ে। তিন বছর আগে গৃহকর্ত্রী সাথী আক্তার পারভীন ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় একটি ট্রেনিংয়ে যান। সেখানে হেনাকে দেখেন। তখন তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন সাথী আক্তার।
ওই সময় হেনার স্বজনদের গৃহকর্ত্রী সাথী বলেছিলেন, হেনাকে তার নিজের সন্তানের মতো করে রাখবেন। এরপর মাস শেষে ২ হাজার টাকা করে হেনার ফুফুর কাছে পাঠাবেন। চার মাস এভাবে টাকা পাঠালেও এরপর থেকে আর কোনো টাকা পাঠাননি। হেনার জন্য টাকা আলাদাভাবে জমিয়ে রাখছেন বলে তখন তাদেরকে জানান।
গত ২৬ আগস্ট দুপুরে কলাবাগানের ভূতের গলির একটি বাসা থেকে শিশু গৃহকর্মী হেনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের সুরতহাল দেখে ধারণা করা হয়- তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে পুলিশ। এতে সাথী আক্তার পারভীনকে আসামি করা হয়েছে।