বগারচরের ১১ মেম্বারের বিরুদ্ধে ৯ গ্রামপুলিশের অভিযোগ

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার বগারচর ইউনিয়নের ১১ জন মেম্বারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন একই ইউনিয়নের ৯ জন গ্রামপুলিশ। ১১ জন মেম্বার কর্তৃক সনাতন ধর্মাবলম্বী গ্রাম পুলিশকে পুড়িয়ে হত্যা, পৃথক গ্রামপুলিশকে ভয়ভীতি দেখানোও সকল গ্রাম পুলিশকে শায়েস্তা করার হুমকি প্রদানের অভিযোগে ৯ জন গ্রাম পুলিশ ঐক্যবদ্ধভাবে বকশীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। একই কারণে তারা জামালপুরের জেলা প্রশাসক ও বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমান মাসুম প্রামানিক।

জানা যায়, বকশীগঞ্জ উপজেলার বগারচর ইউনিয়নে ২০ আগস্ট বগারচর ইউনিয়ন পরিষদে টিসিবির মাল বিতরণের সময় পরিষদের প্রধান গেটে দায়িত্ব পালন করছিলেন গ্রামপুলিশ শ্রী দিননাথ। ওই সময় ইউপি সদস্য আফসার আলী, আবদুল বাসেদ, ইউপি সদস্য লাইলী বেগমের স্বামী সাধীন মিয়া ও রূপালী বেগমের স্বামী বিল্লাল হোসেন দ্রুত গেইট খুলতে বলেন। গেইট খুলতে দেরি হওয়ায় তারা শ্রী দিননাথকে লাঞ্চিত করেন এবং আগুনে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেন।

অপরদিকে একই দিন রাতে গ্রামপুলিশ জহরুল হক সারমারা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ইউপি সদস্য আফসার আলী, আমিনুল ইসলাম, সোহেল রানা পলাশ, হাফিজুর রহমান, আবদুল বাসেদ, লাইলী বেগমের স্বামী সাধীন মিয়া ও রূপালী বেগমের স্বামী বিল্লাল হোসেন তার গতিরোধ করে লাঞ্চিত ও প্রাণনাশ্যের হুমকি দেন। এ বিষয়ে গ্রামপুলিশ জহরুল হক বাদী হয়ে জামালপুরের জেলা প্রশাসক ও বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে গ্রাম পুলিশ শ্রী দিননাথ জানান, আমি সংখ্যালঘু হওয়ায় বগারচর ইউপি’র মেম্বাররা প্রতিনিয়ত আমার সাথে খারাপ আচরণ করেন। আমাকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেন। তাই জীবনের নিরাপত্তার জন্য আইনের আশ্রয় নিয়েছি।

গ্রাম পুলিশ জহুরুল হক জানান, মেম্বারদের ভয়ে আমরা সবসময় তটস্থ থাকি। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে প্রতিকারের আশায় সকল গ্রামপুলিশের পক্ষে অভিযোগ দিয়েছি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আফসার আলী ও আবদুল বাসেদ জানান, গ্রামপুলিশরা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করছে। তাদের অভিযোগের কোন প্রমাণ নেই। অভিযোগ ভিত্তিহীন।

এ ব্যাপারে বগারচর ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমান প্রমানিক মাসুম জানান, গ্রামপুলিশরা আমার কাছে কোন অভিযোগ দেননি। থানা পুলিশ, ইউএিনও ও জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। কাজেই অভিযোগের বিষয়ে তারাই তদন্ত করবেন। তদন্তে ঘটনা প্রমাণিত হলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহেল রানা জানান, গ্রামপুলিশদের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার জানান, বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গ্রামপুলিশদের সাথে আলোচনা হয়েছে। তদন্ত চলমান।

Recommended For You