মাদ্রাসার ১০ ছাত্রীকে মলমুত্র খাওয়ানোর অভিযোগ

মোবাইলে ছবি তোলার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মাদ্রাসার ১০ ছাত্রীকে শিক্ষক তাসলিমা বেগম, তার স্বামী আব্দুর রশিদ, ছেলে তাইয়েবা ও মেয়ে নুসরাত মারধর করে মলমুত্র খাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাদ্রাসা ছাত্রী জামিলা, জান্নাতুল ফেরদৌসী ও মারিয়া ইসলাম এমন অভিযোগ করেন।

অসুস্থ্য তিন ছাত্রীকে সোমবার (৫ জুন) স্বজনরা আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।

ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার রাতে আমতলী উপজেলার মাদানীনগর জামিয়া সাইয়েদা ফাতিমা বালিকা হাফিজিয়া মাদ্রসায়। এ ঘটনায় বরিবার রাতে অভিভাবক খালেক আকন শিক্ষক তাসলিমা বেগমসহ চারজনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলমের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।

জানাগেছে, উপজেলার মাদানীনগর জামিয়া সাইয়েদা ফাতিমা বালিকা হাফিজিয়া মাদ্রসায় জামিলা, জান্নাতুল ফেরদৌসী, মারিয়া ইসলাম, রুবাইয়া, সাদিয়া, মারহামা,মারুফা, নুসাইবা নাজরানা বিভাগে লেখাপড়া করে। গত শুক্রবার রাতে মাদ্রাসার শিক্ষক তাসলিমা বেগমের মেয়ে নুসরাত অভিযোগ তোলে ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসি মোবাইলে তার ছবি ধারণ করেছে। এমন মিথ্যা অভিযোগ তুলে ওই রাতেই ১০ ছাত্রীর বিচারে বসেন শিক্ষক তাসলিমা। এক পর্যায় শিক্ষক তাসলিমা বেগম, তার স্বামী আব্দুর রশিদ, ছেলে তাইয়েবা ও মেয়ে নুসরাত ওই ১০ ছাত্রীকে মারধর শেষে মলমুত্র, ড্রেনের পঁচা পানি, হাঁসের মল বালতিতে মিশিয়ে জোরপুর্বক খাইয়ে দেয়। এতে ওই ১০ ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে।

শনিবার সকালে তাদের মাদ্রাসা থেকে ভর্তি বাতিল করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। ছাত্রীরা বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের কাছে এ ঘটনা জানায়।

সোমবার অসুস্থ্য তিন ছাত্রী জামিলা,জান্নাতুল ফেরদৌসী ও মারিয়া ইসলামকে স্বজনরা আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।

এ ঘটনায় রবিবার অভিভাবক খালেক আকন শিক্ষক তাসলিমাসহ চারজনের বিরুদ্ধে ইউএনও মুহাম্মদ আশরাফুল আলমের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

হাসপাতালে ভর্তি জামিলা,জান্নাতুল ফেরদৌসী ও মারিয়া ইসলাম বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষক তাসলিমা বেগম, তার স্বামী আব্দুর রশিদ, মেয়ে নুসরাত ও ছেলে তাইয়েবা মোবাইলে ছবি তোলার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাদের মারধর করেছে এবং মলমুত্র, ড্রেনের পঁচা পানি ও হাঁসের মল বালতিতে মিশিয়ে জোরপুর্বক খাইয়ে দিয়েছেন। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।

অভিভাবক আমিন খান, খালেক আকন ও সেলিম মোল্লা বলেন, কোমলমতি শিশুদের সাথে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার শাস্তি দাবি করছি।

মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আব্দুর রশিদ ছাত্রীদের মলমুত্র খাওয়ানোর কথা স্বীকার করে বলেন, মোবাইলে আমার মেয়ে নুসরাতের ছবি তোলায় বিচার করেছি এবং ওই ছাত্রীদের মাদ্রাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি।

আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ডব্লিউজি/এমএইচএস

শেয়ার করুন:

Recommended For You