সার্টিফিকেট পোড়ানো মুক্তাকে চাকরি দিলেন প্রতিমন্ত্রী পলক

সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা শেষ হওয়ায় ইডেন কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মুক্তা সুলতানা ফেসবুক লাইভে এসে নিজের সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেন। কেননা, সরকারি চাকরির জন্য নির্ধারিত বয়সসীমার ভেতর তিনি কোনো চাকরি পাননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পে এবার চাকরি হলো মুক্তার।

অনলাইনে মুক্তার সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বাংলাদেশে কম্পিউটার কাউন্সিলে স্ট্যাবলিশমেন্ট অভ সিকিউরড ইমেইল ফর গভঃ অ্যান্ড ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার প্রকল্পের ‘কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার’ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। ছয় মাস মেয়াদী প্রকল্পে এই পদে ৩৫ হাজার টাকা মাসিক বেতনে আগামী ৪ জুন থেকে কর্মক্ষেত্রে যোগ দেবেন মুক্তা।

সোমবার (২৯ মে) আগারগাঁওয়ে মুক্তা সুলতানার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।

এসময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপাতত ছয়মাসের জন্য মুক্তা সুলতানার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। স্থায়ীর বিষয় বলব না, তবে বিশ্বাস করি সে ছয় মাসের আগেই নিজের একটা জায়গা তৈরি করে ফেলতে পারবেন।

চাকরি পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে ধন্যবাদ জানান মুক্তা সুলতানা। একজন প্রতিমন্ত্রী ফেসবুক ভিডিও দেখে নাগরিকের ক্ষোভ-দুঃখ হতাশা দূর করতে তাকে খুঁজে এনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে চাকরির ব্যবস্থা করবেন তা এখনো তার কাছে বিস্ময়ের বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে গত মঙ্গলবার (২৩ মে) ইডেন কলেজের সামনে মুক্তা তার নিজের ফেসবুক লাইভে থেকে সার্টিফিকেটে আগুন ধরিয়ে দেন।

জানা যায়, সেশনজট ও করোনার কারণে চাকরির আবেদনের সময় শেষ হয়েছে। এ কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করে সার্টিফিকেট পুড়িয়ে দেন মুক্তা। তার দাবি অনুযায়ী, এ শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেট সরকারি-বেসরকারি কোনো চাকরিতে কাজে লাগছে না। ফলে তিনি এসব পুড়িয়ে দেন।

লাইভে দেখা যায়, তিনি তার মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সার্টিফিকেট পোড়াচ্ছেন। এর আগে তিনি দেখান, তার স্নাতক পরীক্ষা ২০১৩ সালে এবং স্নাতকোত্তর পরীক্ষা ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৫ সালে তার পরীক্ষা হলেও ২০১৯ সালে তার সার্টিফিকেট ইস্যু হয়। ২০১৫ সালে পরীক্ষা দিয়েও তিনি ২০১৯ সাল পর্যন্ত চার বছর কোথাও আবেদন করতে পারেননি। চাকরির বয়সসীমা অনুযায়ী তার আবেদনের সময়ের চার বছর কাজে লাগাতে পারেননি।

ক্ষোভ প্রকাশ করে সেদিন মুক্তা বলেন, যে সার্টিফিকেট দিয়ে সরকারি চাকরিতে আবেদন করা যায় না, বেসরকারি চাকরিতেও আবেদন করা যায় না, সে সার্টিফিকেট রেখে লাভ কী? পোকামাকড়ে খাওয়ার চেয়ে ছাই বানানো অনেক ভালো।

সেদিন তিনি আরো বলেন, দক্ষিণ এশিয়াসহ পৃথিবীর কোথাও এই বয়স সীমা নেই। শুধু বাংলাদেশ আর পাকিস্তানে এ অবস্থা। ২৭ বছর পড়াশোনা করে যদি আবেদনই না করতে পারি, তা হলে পড়াশোনা করে লাভ কী?

ডব্লিউজি/এমএইচএস

শেয়ার করুন:

Recommended For You