নৈশ্য প্রহরী হত্যার রহস্য উদঘাটন রক্ষিত টাকা ছিনিয়ে নিতেই মাদ্রাসা প্রহরীকে হত্যা,আটক ২

১৩ জুন ২০২৫ ইং ছবি সংগৃহীত

পাবনার ভাঙ্গুড়ার খানমরিচ ইউনিয়নের চন্ডিপুর সি.কে.বি. আলীম মাদ্রাসার নৈশ্য প্রহরী আব্দুল গনি (৬৫) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত দুই কিশোরকে আটক করা হয়েছে। 

হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে গচ্ছিত টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত হামলা। আটককৃত মোঃ হাবিব (১৪) উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের বৃদ্ধমরিচ গ্রামের জেলহক প্রামাণিক ছেলে ও মোঃ আহম্মাদ আলী (১৬) একই গ্রামের আছমত আলীর ছেলে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে চাটমোহর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরজুমা আকতার জানায়, ৯ জুন রাত ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে ১০ জুন রাত ১২টা ৪৫-এর মধ্যে মাদ্রাসার নিজ কক্ষে আব্দুল গনিকে (৬৫) ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা, মুখ, পিঠ ও ডানহাতে গুরুতর জখম করা হয়। 

পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত অবস্থায় তাকে সিরাজগঞ্জ শহীদ মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে ১০ জুন সকাল ৯টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। 

এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আব্দুল বারিক বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা (নং ০৬, তারিখ ১১/০৬/২০২৫, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড) দায়ের করেন।

পাবনার পুলিশ সুপার মোঃ মোরতোজা আলী খাঁনের নির্দেশনায় এবং চাটমোহর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরজুমা আকতার-এর তত্ত্বাবধানে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) আল-আমিন হোসেনের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়। 

পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সংঘাতকারী দুই কিশোরকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতে জবানবন্দিতে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে।

পুলিশি তদন্তে জানা যায়, নিহত আব্দুল গনিকে ‘নানা’ বলে ডাকত হাবিব এবং মাদ্রাসায় প্রায়ই তার সঙ্গে রাত যাপন করত। আব্দুল গনির নিকট গচ্ছিত টাকা-পয়সার বিষয়টি জানত হাবিব এবং সে বিষয়টি তার বন্ধু আহম্মাদ আলীর সঙ্গে আলোচনা করে। 

ঘটনার রাতে তারা ডেন্ডি (গাম) সেবন করে এবং টাকা ছিনিয়ে নিতে হত্যার পরিকল্পনা করে। রাত ১১টা ২০ মিনিটে তারা মাদ্রাসায় প্রবেশ করে। হাবিব ওয়াজ শোনার অজুহাতে ভিকটিমের সঙ্গে বসে মোবাইল ফোন দেখতে থাকে এবং সুযোগ বুঝে আহম্মাদ আলী কক্ষে থাকা ছেনি দিয়ে আব্দুল গনির মাথায় আঘাত করে। 

পরে হাবিব দা দিয়ে আরও কয়েকটি আঘাত করে। হত্যার পর হাবিব ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য নিজেই ভিকটিমের ছেলেকে ফোন করে জানায় যে কেউ তার বাবাকে কুপিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দা ও ছেনি উদ্ধার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ আব্দুল করিম জানায়, কিশোরদের মূল উদ্দেশ্য ছিল মাদ্রাসা প্রহরীর নিকট থাকা টাকা হাতিয়ে নেওয়া, যা তারা নেশা জাতীয় দ্রব্য কিনতে ব্যবহার করতে চেয়েছিল।

পাবনা প্রতিনিধি – ডব্লিউ জি ডিজিটাল

Recommended For You

About the Author: Shafiul Islam