ফেনীর পরশুরামে মুহুরি নদীতে সেচপাম্প বসাতে দিচ্ছে না ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহীনি (বিএসএফ)। কৃষকরা গত এক সপ্তাহ ধরে চেষ্টা করেও বিএসএফের বাধার কারণে মুহুরি নদীতে জমি চাষাবাদের জন্য পানির পাম্প চালু করতে পারছে না। এতে ফেনীর পরশুরামের মির্জানগর ইউনিয়নের পূর্ব নিজকালিকাপুর সীমান্ত এলাকায় প্রায় ২০০ কৃষকের আগামী বোরো চাষাবাদে ১৪০একর জমির চাষাবাদ বন্ধের উপক্রম দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, পূর্ব ও পশ্চিম নিজকালিকাপুর এলাকার ১০ থেকে ১২ জন কৃষকের পরিচালনায় ও স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন “আদর্শ জনকল্যাণ সমিতি”র অধীনে প্রায় ১৪০ একর জমিতে গত ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে মুহুরি নদীর পানি সেচ দিয়ে চাষাবাদ করে আসছে।
কিন্তু চলতি মৌসুমে চাষাবাদের জন্য সমিতির পক্ষ থেকে মুহুরি নদীতে সেচ পাম্প বসানোর চেষ্টা করলে ভারতীয় বিএসএফ বাধা দেয়। স্থানীয় কৃষকরা বিষয়টি নিজ কালিকাপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যদের অবহিত করে। পরে বিজিবি সদস্যরা ওই স্থানে সেচ পাম্প বাসানো নিয়ে বিএসএফ সদস্যদের পাহারায় সতর্ক অবস্থানে থাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনা এড়াতে স্থানীয় কৃষকদের সরিয়ে নেয়।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে: কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভারতীয় বিএসএফ’র সাথে কথা বলেন। বিএসএফ এর সাথে আলোচনা শেষে লে: কর্নেল মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন কৃষকদের আস্বস্ত করে জানান ভারতীয় সিমান্তরক্ষী বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সাথে চূড়ান্ত আলোচনা শেষে আগামীকালের মধ্যে সেচস্কিম চালু করা হবে।
সর্বশেষ আপডেট পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/
আদর্শ জনকল্যাণ সমিতির ম্যানেজার আব্দুল মালেক বলেন পুর্ব নিজকালিকাপুর এলাকার বাসিন্দারা গত ৩০ বছর ধরে মুহুরি নদীতে পাম্প বসিয়ে নদীর পানি সেচ দিযে জমি চাষাবাদ করে আসছেন। কিন্তু চলতি মৌসুমে নদীতে সেচ পাম্প বসাতে গেলে ভারতীয় বিএসএফ বাধা দেয়।
স্থানীয় কৃষক আবুল খায়ের বলেন, ভারতীয় বিএসএফ’র বাঁধার কারণে জমি চাষাবাদের জন্য সেচ পাম্প বসাতে পারছে না কৃষকরা। এতে কৃষকদের চাষাবাদের জমি অনাবাদি থাকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সেচস্কিম পরিচালনায় দায়িত্বে থাকা নুর মোহাম্মদ জানান, গত ৮ থেকে ১০ বছর আগেও একবার বিএসএফ ওই স্থানে সেচপাম্প বাসাতে বাঁধা দেয়। পরে বিএসএফ ও বিজিবির দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শেষে সেটি পুনরায় চলমান ছিল কিন্তু গত ৩ দিন আগে আমরা সেচপাম্পটি বাসাতে গেলে বিএসএফ বাঁধা দেয়। আমরা বিষয়টি সাথে সাথে বিজিবি’কে জানালে বিজিবি ও বিএসএফের দুই পক্ষের আলোচনা শেষে আমাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। আজকে বৃহস্পতিবার বিকালে বিজিবি -৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে: কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন আমাদের আস্বস্ত করেন আগামীকাল বিএসএফের সিও পার্য়ায়ের কর্মকর্তার সাথে কথা বলে পাম্পটি বসানোর ব্যবস্থা করা হবে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে: কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন স্থানীয় কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে মুহুরি নদীর পানি সেচ দিয়ে ওই এলাকার কৃষকেরা জমি চাষাবাদ করে আসছে কিন্তু চলতি মৌসুমে নদীতে সেচ পাম্প বসাতে গেলে ভারতীয় বিএসএফ বাধা দিলে বিষয়টি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছে আশা করি দু-একদিনের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।