লক্ষ্মীপুরে খড়ের দাম আকাশচুম্বি, গো-খাদ্য সংকটে খামারিরা

লক্ষ্মীপুরে খড়ের দাম আকাশচুম্বি, গো-খাদ্য সংকটে খামারিরা

বন্যার কারণে খড়ের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। যার প্রভাব পড়েছে ছোট-বড় সব ধরনের খামারে। এতে লক্ষ্মীপুরে ধানের থেকেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে খড়। আগের বছর সমপরিমাণ খড় কিনতে খরচ হচ্ছে এখন প্রায় দ্বিগুণ টাকা।

লক্ষ্মীপুর জেলার সদর রায়পুর, রামগতি, কমলনগর, চন্দ্রগঞ্জ থানায় ছোট ছোট আঁটি ও জমির পরিমাণ অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে খড়। বর্তমানে এক কেজি খড় বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায় এবং প্রতি মণ (৪০ কেজি) খড়ের দাম দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা, যা ধানের দামের থেকেও বেশি। যেখানে এক মন ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা থেকে একটু বেশি।

কৃষক ফয়েজ আহমেদ বলেন, তিনি চলতি মৌসুমে ১৬০ শতক জমিতে ধান চাষ করেছেন। তিনি আশা করছেন, তার জমিতে ৫০ হাজার টাকার ধান পাবেন। কিন্তু তিনি ইতোমধ্যে তার জমির খড় বিক্রি করে ফেলেছেন ৭০ হাজার টাকায়। গত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে খামারিরা বাড়িতে গিয়ে তার খড়ের আগাম দাম দিয়ে গেছেন। গত বছর একই জমির খড় বিক্রি করেছিলেন ৫ হাজার টাকায়।

চর কালকিনি এলাকার কৃষক মো. মন্তাজ, যিনি প্রায় ৫০ ট্রাক খড় বিক্রি করেছেন। প্রতি ট্রাকে প্রায় ১০ হাজার টাকা করে লাভ হচ্ছে , প্রতিবছরের এ সময়ে তিনি খড় সংগ্রহ করে রাখেন এবং এতে তার প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হয়। তবে চলতি মৌসুমে গত বছরের তুলনায় খড়ের দাম বেড়ে গেছে। তিনি এবার ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকায় গত মৌসুমের সমপরিমাণ খড় কিনেছেন।

খড়ের এমন নজিরবিহীন দাম অতীতে কখনো দেখেননি স্থানীয় কৃষক ও খামারিরা। কৃষকরা খড় বিক্রি করে খুশি হলেও হতাশ পশু খামারিরা।গোখাদ্যের তীব্র সংকটে অস্থির হয়ে পড়েছেন তারা। অনেকেই গরু বিক্রি করেতে চেয়েও পারছেন না। গরুর দামও ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

সর্বশেষ আপডেট পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/

খামারি ইউসুফের খামারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি গরু পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। তিনি বলেন, প্রতিটি গরুর জন্য বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় তিনশ টাকার খড় ও খাদ্য লাগছে। এত খরচ বহন করা আমার পক্ষে সম্ভব না। সব গরু বিক্রি করতে চেয়েছি। কিন্তু পাঁচ মাস পালন করার পর এখন ১৫ লাখ টাকার গরু মাত্র অর্ধেক দামে বিক্রি করতে পারব। হিসেবে করে দেখেছি, এতে আমার ৬০ ভাগের মতো ক্ষতি হচ্ছে। এখন গরু রাখতেও পারছি না, আবার বিক্রিও করতে পারছি না। কাঁচা ঘাস নেই এবং খড়ের দাম খুব বেশি।

খামারি মো. রফিক বলেন, খড় গরুর খাবারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু চাহিদা বাড়তে থাকায় অনেক খামারি দানাদার খাবারের দিকে ঝুঁকছেন। এতে খামার পরিচালনার খরচ আরও বেড়ে যাচ্ছে।

রায়পুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার, আতাউর রহমান বলেন, সম্প্রতি বন্যায় কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তার সাথে সাথে গবাদি পশু লালন পালন করেন তারা আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই কৃষক ও গবাদি পশু লালন-পালন যারা করে তাদের জন্য কঠিন একটু সময় যাচ্ছে।

 

শেয়ার করুন:

Recommended For You