সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাস ছাত্রজনতার সংগ্রামের ফল। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা পেয়েছি, দেশ পেয়েছি ও পতাকা পেয়েছি। কিন্তু সাম্য, ন্যায় বিচার ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। গত ১৫ বছর অন্যায়, জুলুম, নির্যাতনের পঞ্জিভূত ক্ষোভের ফলে ছাত্রজনতাকে আবারও ২০২৪ সালে সংগ্রাম করতে হলো। জুলাই-আগস্টে ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের পর জনমানসে জেগেছে বৈষম্যহীন, মুক্ত মানবিক গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
শনিবার (১৬ই নভেম্বর) রংপুর শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তার চেক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে উল্লেখ করে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, ২০২৪ সালের মুক্তিযোদ্ধাদের পুর্নবাসন ও দেশ গঠনে কাজে লাগাতে হবে। প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধাকে চিহ্নিত করতে হবে। পূর্বের ন্যায় আবারও ভুল করা যাবে না। যে কষ্ট আমরা ৫৩ বছর ধরে বহন করেছি এবং মুক্তিযুদ্ধের নামে বার বার ভুল করেছি সে ভুল আমরা করবো না। ২০২৪ সালে তরুণ সমাজ যেভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন ও যে সাহস দেখিয়েছিন তা সারা বিশ্বকে বিস্মিত করেছে। যুগে যুগে এটা নিয়ে গবেষণা হবে। ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে আমারা দ্বিতীয়বার নতুন করে সমাজ গড়ার যে সুযোগ পেলাম তা কাজ লাগাতে হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, এই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যারা প্রাণ দিয়েছেন আবু সাঈদ তাঁদের প্রতিনিধিত্ব করেছে। আর যারা আহত হয়েছেন তাঁদেরও ভুলে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা তাঁদের পাশে থাকবো। আমাদের কাজের সমালোচনা ও তিরস্কার করুন কিন্তু মুখ ফিরিয়ে নিবেন না। কাজ করতে ভুল হতে পারে। ভুল শুধরে এগিয়ে যেতে হবে।
সর্বশেষ আপডেট পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/
অনুষ্ঠানে মৎস ও প্রাণীসম্পদ উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার বলেন, আবু সাঈদ সাহসের প্রতীক হয়ে বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত করে দিয়েছে। তাঁর সাহস আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে অন্যদের অনুপ্রাণিত করেছে। তাঁদের বীরত্বের কাছে আমরা মাথা নত করি। তাঁরা আমাদের যে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, সেই স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে হবে।
রংপুরের জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন প্রমুখ। বক্তব্য শেষে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদদের ৪৪ পবিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে দুই কোটি বিশ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের পরিবার, সরকারি কর্মকর্তা, শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সদস্য ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।