বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফ্যাসিবাদের মূল হোতা ভারতে অবস্থান করছেন। আর ভারত আমাদের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েই যাচ্ছে। এটা বলতে আমার কোনো দ্বিধা নেই। এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে বলে আমি মনে করি।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) ঠাকুরগাঁওয়ের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন যে প্রবণতা শুরু হয়েছে বাংলাদেশের এই যে অর্জন, এই অর্জনকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য সুনির্দিষ্টভাবে কিছু ব্যক্তি বা কিছু লোক চেষ্টা করছে। আমি এই ব্যাপারে সকলকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাবো। এই মুহূর্তে আমরা আরেকটা বিপর্যয় গ্রহণ করতে পারি না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকার জাতিটাকে বিভক্ত করে ফেলেছে। সেই বিভক্তিটা দূর করে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে চাই। মতাদর্শ ভিন্ন থাকতে পারে, সেটি ভিন্ন কথা। দেশের মানুষের এ বিষয়ে খেয়াল থাকতে হবে। সেই ঐক্যটা আমরা রাখতে চেষ্টা করেছি এবং সফল হয়েছি। জাতি হিসেবে আমাদের অসহিষ্ণু হলে চলবে না। ১৭ বছরে যে ঝঞ্ঝা তৈরি হয়েছে সেটা সরাতে একটু সময় লাগবে। এ জন্য একটু সময় দিতে হবে। বর্তমান যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আছে তাদের প্রত্যেকটা সেক্টরে হাত দেওয়ার প্রয়োজন বলে আমি মনে করি না। নির্বাচিত সরকার এলে তারা এই সংস্কার করবে।
তিনি আরও বলেন, এত বড় একটি অভ্যুত্থানের পরে আমরা যদি ধৈর্য না ধরি তাহলে তো চলবে না। জনগণ এখন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার জন্য যে সংস্কার প্রয়োজন সেগুলো করা দরকার বলে আমরা মনে করি। আমি বাসায় এসেই খোঁজখবর নিয়েছি যে এখানে আলুর দাম কত, সবজির দাম কত, চালের দাম কত। সবকিছুর দাম অনেক বেড়ে গেছে।
রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, আরেকটা রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে আমি মনে করি যে আমার মতামত দেওয়া সমুচিত নয়। কারণ এই মতামত দেবে জনগণ। কে রাজনীতি করবে আর কে রাজনীতি করবে না এবং নির্বাচনে যারা জনগণের কাছে খারাপ হয়ে যাবে তারা বাতিল হয়ে যাবে অথবা পার্লামেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে। আমি গণতান্ত্রিক একজন ব্যক্তি, আমি বিশ্বাস করি যে, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নয়, এটা জনগণের ব্যাপার।
উপদেষ্টা নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে উপদেষ্টা নিয়োগ করার কোনো প্রচলন নেই। এটা প্রধান উপদেষ্টার নিজস্ব এখতিয়ার। তাদের সুবিধার জন্য যাকে যাকে নেওয়ার দরকার তাকে তারা নেবেন।
সর্বশেষ আপডেট পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/
মির্জা ফখরুল বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব হবে নির্বাচনের জন্য একটি লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করা। সকলে যেন ভোট দিতে পারে এবং সকলে যাতে অংশগ্রহণ করতে পারে তার জন্য কাজ করা। নিরপেক্ষ লোকজনকে নির্বাচনের জায়গাগুলোতে বসাতে হবে। বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষ করা, প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করা। নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার জন্য এগুলোই প্রধান কাজ।
সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা রিজেক্ট করেছি, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন সম্ভব না।
এসময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফসহ জেলা, উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।