জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি আগামী তিন দিনের মধ্যে পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সকল দাবিই যৌক্তিক। এর সাথে আমি একমত।
সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের কাছে এসে এই প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
এ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা ছাত্র আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান ভুলে যাইনি। আমাদের একটাই কষ্ট, এখনো শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের জন্য রাস্তায় নামতে হয়। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, আপনাদের সব দাবি মেনে নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্টে থাকেন। তাদের হল নেই। শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দাবি সম্পূর্ণ যৌক্তিক। শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমি পুরোপুরি একমত। হলের সমস্যা তো আর একদিনের মধ্যে সমাধান করা সম্ভব নয়। আমরা আপনাদের দাবির বিষয়টা দেখছি। আগামী একদিনের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া আগামী তিন দিনের মধ্যে করা হবে।
সর্বশেষ আপডেট পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/
এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে আজকেই দিতে হবে। তা না হলে তারা সচিবালয়ের সামনে থেকে যাবেন না। পাশাপাশি অসহযোগিতামূলক আচরণ করার জন্য শিক্ষা সচিবকে ক্ষমা চাইতে বলেন।
তখন নাহিদ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলকে সচিবালয়ের ভেতরে যাওয়ার আহ্বান জানান। পরে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী একেএম রাকিব বলেন, শিক্ষা সচিবকে ক্ষমা চাইতে হবে এবং দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে দিতে হবে।
আরও পড়ুন শিক্ষা ভবন ঘেরাও জবি শিক্ষার্থীদের
আন্দোলন স্থগিত করে ফিরে গেলেন শিক্ষার্থীরা
পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিক আশ্বাস পেয়ে আন্দোলন স্থগিত করে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা।
সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী প্রফেসর ড. এম আমিনুল ইসলামের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে এ কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. নাসিরউদ্দিন।
তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে মঙ্গলবার বেলা ১২টায় সচিবালয়ে সভা হবে। সেখান থেকে দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো–
১. স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ অফিসারদের হাতে এ দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে।
২. শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা ঘোষণা করতে হবে যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর হয়েছে।
৩. অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং পুরাতন ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সব চুক্তি বাতিল করতে হবে।
৪. সম্প্রতি ইউজিসির ঘোষণা করা পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৫. বিশ্ববিদ্যালয়ের বাৎসরিক বাজেট সর্বনিম্ন ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।