শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ আছে কাজ নেই, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পাঠদান না দিয়ে বেতন উত্তোলন, সপ্তাহে একদিন বা দুইদিনে শিক্ষক ও কর্মচারী হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগষ্টের পর থেকেই রাজশাহীর ৯টি উপজেলার বিভিন্ন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে না না অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের মনগড়া নিয়েমে চলছে। বিশেষ করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপর ভর করে শিক্ষক ও কর্মচারীদের এই জটিলতার জটলা সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক রদবলের ফলে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের নেতৃত্ব পরিবর্তণ হয়েছে। কিন্ত অনিয়ম পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে। এই চিত্র গুলো জেলার প্রত্যেক উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এই অনিয়ম গুলো দীর্ঘদিনের। তবে এখনও চলছে তার নিজস্ব গতিতে। তবে পরিচালনার নায়কদের খুজে পওয়া যাচ্ছে না। গানের কথায় “আমরা সবাই রাজা, আমাদেরি রাজার রাজত্বে” প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা তাদের কর্মস্থলে আসতে পারছেন না রাজনৈতিক কারনে। ওই সুযোগে শিক্ষকদের মাঝেই জটলা সৃষ্টি হয়ে দুইভাগে বিভক্ত, কোথাও অধিক বিভাজন হয়েছে।
৯টি উপজেলায় অনেক এমপিও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের ল্যাব ও গ্রন্থাগার নেই কিন্ত নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মচারীরা বছরের পর বছর ধরে এমপিও’র সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। যেখানে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ইন্ধন রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের তথ্যমতে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অর্থ ও রাজনৈতিক শক্তির বলে শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিয়োগ হয়েছে। গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষকের অভাবে প্রতিনিয়ত শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে।
সত্য উৎঘাটনের সন্ধানে জেলার গোদাগাড়ী, মোহনপুর, তানোর, বাগমাড়া, দূর্গাপুর, পুঠিয়া, পবা. চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের প্রবণতা অনেক বেশি। প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রাপ্ত প্রদর্শক ও লাইব্রেরিয়ান অলস সময় কাটিয়ে বেতন তুলছেন। প্রতিষ্ঠানের তাদের নেই কোন দপ্তর বা কাজ। হই হই রই রই করে দিন পার করে চলেছেন। শিক্ষকদের ন্যায় এই সকল কর্মচারীও সপ্তাহে এক বা দুই দিন ফাকা হাজিরা খাতয় সকল সাক্ষর করছেন।
এবিষয়ে কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের ফোন দিলে তার বলছেন, পূর্বে যা হয়েছে এখন থেকে তা আর হবে না। তবে নতুন নিয়মে শুরু হয়েছে ফাকি দেওয়ার কৌশল। শিক্ষক ও কর্মচারী সাক্ষর করে ওই দিনের জন্য লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছেন। যুদিও অফিস চলাকালিন সময় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের স্ব স্ব কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার সরকারী নিদের্শনা রয়েছে।
জেলার চারঘাট উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, এই উপজেলায় ৫৮টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছ যার মধ্য একটি সরকারী স্কুল। ১২টি কলেজের মধ্যে ১টি সরকারী কলেজ আছে। উপজেলায় ১৮টি কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজের মধ্যে ১টি সরকারী কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার শিক্ষার্থীরা অধ্যায়ন করছে। তবে সরকারী প্রতিষ্ঠান ব্যাতিত এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ আছে। বিশেষ করে কলেজের অনিয়মের জটলা বেশি। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কিছু করার থাকে না। উপজেলা ইউএনও কলেজের বিষয় গুলো তদারকি করছেন বলে জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সোহেল হোসেন।
প্রসঙ্গত, ইউএনও সানজিদা সুলতানা বলেন, এই বিষয়ে গুলো নিয়ে ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানকে সর্তক করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে যে কোন ধরনের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল আজিজ সরদার জানান, জেলা অফিসে এই ধরনের কোন অভিযোগ আসেনি। তবে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।