নিউজিল্যান্ডের ইতিহাস, ২৪ বছর পর ভারতকে নিজেদের মাঠে হোয়াইটওয়াশ

ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করে নিউজিল্যান্ডের ইতিহাস

টিম ইন্ডিয়াকে ৩ ম্যাচের সিরিজে প্রথম হোয়াইটওয়াশ করে নিউজিল্যান্ডের ইতিহাস, এ যেন এক মহাযুদ্ধের ইতিহাস। কেননা  ভারতের বিপক্ষে ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জেতা রীতিমতো যুদ্ধ জয়ের মতো, হোয়াইটওয়াশ তো সেখানে বিশ্বযুদ্ধ জয়তুল্য ব্যাপার। এর আগে ভারতের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ পেয়েছিল কেবল দক্ষিণ আফ্রিকা, তাও ২৪ বছর আগের ওই সিরিজটি ছিল মাত্র ২ ম্যাচের।

রবিবার (৩ নভেম্বর) তিন ম্যাচের সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ২৫ রানে জিতেছে নিউজিল্যান্ড। ১৪৭ রানের লক্ষ্য দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতকে ১২১ রানে অলআউট করে দিয়েছে তারা। বেঙ্গালুরুতে প্রথম ম্যাচে ৮ উইকেটে জয়ের পর কিউইরা পুনেতে ১১৩ রানে জিতে।

এই সিরিজের আগে ভারতের মাটিতে মাত্র ২টি টেস্টে জয় ছিল নিউজিল্যান্ডের। ১৯৬৯ সালে নাগপুরের পর ১৯৯৮ সালে ওয়াংখেড়ে টেস্টে জিতেছিল তারা। এমন অতীত নিয়ে ভারতের মাটিতে তাদেরই হোয়াইটওয়াশ করাটা বিস্ময়করই। তাও দলের সেরা ব্যাটার কেন উইলিয়ামসনকে ছাড়াই, ইনজুরির কারণে এ সিরিজে নেই সাবেক অধিনায়ক।

মুম্বাইয়ে তৃতীয় দিনের শুরুতে এগিয়ে ছিল ভারতই। আগের দিন ৯ উইকেটে ১৭১ রানে কিউইদের বেঁধে রাখে। আজ শেষ ব্যাটার হিসেবে এজাজ প্যাটেলকে তুলে নিয়ে ফাইফার পূর্ণ করেন রবীন্দ্র জাদেজা। তাতে স্বাগতিকরা পায় ১৪৭ রানের লক্ষ্য। কিন্তু এমন ঘূর্ণি পিচে যে সেই লক্ষ্য পাড়ি দেওয়া কঠিন তা বেশ ভালোমতোই জানত ভারত। কিন্তু সতর্ক থেকেও এড়াতে পারেনি ব্যাটিং ধস। এজাজ প্যাটেল, গ্লেন ফিলিপস ও ম্যাট হেনরির সামনে ২৯ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।

সেখান থেকে নিউজিল্যান্ডের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ান ঋষভ পন্ত। পাল্টা আক্রমণ করে ভারতের আশাও বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে যান তিনি। কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথামের রিভিউ না নেওয়ার কারণে এলবিডব্লিউ হয়েও জীবন পান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। কিন্তু শেষমেষ তাকে বিদায় নিতে হলো ‘বিতর্কিত’ এক সিদ্ধান্তে। এজাজের বল ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এলেও উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বেশ হতাশই হন পন্ত। হয়তো তার দাবি ছিল, ব্যাটে বল লাগার কারণে নয়, বরং ব্যাট-প্যাডের সংস্পর্শের কারণেই আল্ট্রা এজে স্পাইক দেখা গেছে।

৫৭ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৬৪ রানে পন্ত সাজঘরে ফেরার পর নিউজিল্যান্ডের জয় পেতে অপেক্ষা ছিল কেবল সময়ের। এজাজ ও ফিলিপস মিলে কাজটা বেশ দ্রুততার সঙ্গেই করেন। পন্ত, ওয়াশিংটন সুন্দর ও রোহিত শর্মা বাদে ভারতের কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি।  প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া এজাজ এবার ৫৭ রানে শিকার করেন ৬ উইকেট।   প্রায় তিন বছর আগে এই মাঠেই এক ইনিংসে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এবার নিউজিল্যান্ডের হয়ে আরও ইতিহাসের জন্ম দিলেন বাঁহাতি এই স্পিনার। তাতে ফিলিপসেরও আছে অনন্য অবদান। ৪২ রান খরচে তার অর্জন ৩ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৩৫/১০ (মিচেল ৮২, ইয়াং ৭১; জাদেজা ৫/৬৫, সুন্দর ৪/৮১)।
ভারত ১ম ইনিংস: ২৬৩/১০ (গিল ৯০, পন্ত ৬০; এজাজ ৫/১০৩)।
নিউজিল্যান্ড ২য় ইনিংস: ১৭৪/১০ (ইয়াং ৫১, ফিলিপস ২৬; জাদেজা ৫/৫৫, অশ্বিন ৩/৬৩)।
ভারত ২য় ইনিংস : ১২১/১০ (পন্ত ৬৪, সুন্দর ১২; এজাজ ৬/৫৭; ফিলিপস ৩/৪২)।
ফল: নিউজিল্যান্ড ২৫ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা:এজাজ প্যাটেল (১১উইকেট)।
সিরিজ: নিউজিল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে জয়ী।
সিরিজসেরা: উইল ইয়াং (২৪৪ রান)।

Recommended For You

About the Author: Shafiul Islam