ভোটের ময়দানে অনেকে অনেক কথা বলে মন্তব্য করে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ট্রাম্প বাংলাদেশ নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন সেটা ভোট পাওয়ার জন্য।
রোববার (৩ নভেম্বর) ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ড্যাফোডিল ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ‘সুন্নাহ কনফারেন্স বাংলাদেশ-২০২৪’-এর উদ্বোধন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. আফম খালিদ হোসেন বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশ নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন এটা আমাদের অনেকটা বিব্রত করে। কারণ আমাদের দেশে যারা অন্যান্য ধর্মাবলম্বী আছেন। আমরা মনে করি তাদের রাজনৈতিক অধিকার, ধর্মীয় অধিকার, সামাজিক অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার স্বীকৃত।
তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে যে অভিযোগগুলো আমরা শুনছি, আমরা এসব অভিযোগের সঙ্গে একমত না। অতএব, ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোট পাওয়ার জন্য সেই কথা বলেছেন। আমরা বিশ্বাস করি এবং আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ যে, এ দেশে যারা অন্যান্য ধর্মের অনুসারী আছেন, তারা নিরাপদে আছেন। তাদের ধর্ম, তাদের ব্যবসা, তাদের রাজনৈতিক কথা বলার অধিকার আমরা নিশ্চিত করেছি, ইট ইজ আওয়ার কমিটমেন্ট।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, কোনো উপাসনালয় যদি কেউ অপবিত্র করতে চায়, আমরা মনে করি তারা কোনো ধর্মের লোক নয়। তাদের পরিচয় তারা ক্রিমিনাল। সেই ক্রিমিনালকে আইনের আওতায় আনার দায়িত্ব সরকারের।
তিনি বলেন, আমরা তো সব সময় বলে আসছি, এ দেশের যারা নাগরিক নানা ধর্মাবলম্বী আছেন প্রত্যেকের অধিকার আছে। তাদের সিটিজেন রাইটস আছে, রিলিজিয়াস রাইটস আছে, এটা সাংবিধানিক রাইট। তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের যে পূজা-পার্বণসহ যেসব উৎসব গেল, আমরা তাদেরকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়েছি। উনাদের কিছু দাবি-দাওয়া আছে যেগুলো সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। আমরা মনে করি সহনশীলতা না থাকলে আমরা একটা সুন্দর বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে পারব না। এজন্য আমাদের বিভেদ কমিয়ে পারস্পরিক সম্প্রীতির আবহ যদি তৈরি করতে পারি তাহলে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারব।
সুন্নাহ্ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের সারাজীবন প্রয়াস চালাতে হবে। সুন্নাহ যদি জীবিত থাকে বেদআত বিতাড়িত হয়ে যাবে। তৌহিদ যদি প্রতিষ্ঠা করতে পারি শিরক বিতাড়িত হয়ে যাবে। আমাদের সমাজে সুন্নাতের নামে বেদআত চলছে। তৌহিদের নামে শিরক চলছে। এটাকে ডিফ্রেনশিয়েট করে সত্যিকার সুন্নাহ মানুষের মাঝে, মানুষের জীবনধারায় আমাদের প্রবিষ্ট করতে হবে। সুন্নাহকে বাদ দিয়ে আমাদের দেশে এমন কি বাইরেও কোরআন চর্চা হয়, আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু কোরআন চর্চা করতে গিয়ে অনেক হাদিস এবং সুন্নাতকে অস্বীকার করা হয়। এটা আরেক ধরনের গোমরাহি। কারণ কোরআনুল কারিমের বেশিরভাগ ব্যাখ্যা হলো সুন্নতে রাসুল, হাদিসে রাসুল নিয়ে।
কনফারেন্স অর্গানাইজিং কমিটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ মনজুরে এলাহীর সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন ফিলিস্তিনের ডেপুটি হেড অব মিশন জিয়াদ হামাদ, কুষ্টিয়া উসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামছুল আলম ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. এম লুৎফর রহমানসহ আরও অনেকে।