গত বছর বরিশাল বিভাগের সবথেকে বেশি ডেঙ্গু রোগী ছিলো বরগুনার জেনারেল হাসপাতালে। এবছরও ঠিক একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বরগুনায়। বরগুনায় প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা। চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসক ও নার্স। প্রতিদিন গড়ে ১৪ থেকে ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে ডেঙ্গু রোগী। ২৫০ বেডের হাসপাতাল হলেও বেড সংকটে ফ্লোরেই থাকতে হচ্ছে রোগীদের। অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন রোগীরা। কর্তব্যরত সেবিকাদের নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ। রোগীদের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, প্রায় সময়ই দু-চার বার ডাকে কোনো নার্সকে পাওয়া যায় না।
ডেঙ্গু রোগীর পাশাপাশি হাসপাতালে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে শিশুরোগ। নিওমোনিয়া, কাশি, ইসফেকশন ও ডেঙ্গুসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে অসংখ্য শিশু। চিকিৎসক সংকটের কারণে সেবা পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
চিকিৎসক সংকটের কারণে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ডেঙ্গু রোগী ছাড়াও নানা রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশুরাও। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী আছে বলে জানান কর্তৃপক্ষ। তবে প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়লেও এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে কোনো রোগী মারা যাননি।
রোগীর স্বজন হেলাল মিয়া বলেন, বেশ কিছুদিন যাবৎ জ্বরে ভুগছিলো আমার মা। হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বেড না থাকায় ফ্লোরেই বিছানা করে থাকতে হচ্ছে। ফ্লোরগুলোতে ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। নোংরা পরিবেশে বাধ্য হয়েই রোগী নিয়ে থাকতে হচ্ছে। শিশুরোগী তানিয়ার বাবা শাহজাহান বলেন, আজ দুদিন যাবৎ ফ্লোরে পড়ে আছি। রোগী পুরো সুস্থ হয়নি। হাসপাতালের পরিবেশে শিশুরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
চিকিৎসক সংকটে বাড়তি চাপ পড়ছে কর্মরত ডাক্তারদের উপর। তাই ঘন্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় রোগী দেখানোর জন্য। হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, টিকেট কাউন্টারে সুদীর্ঘ লাইন। দীর্ঘ সময় রোদে দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। জনকল কম থাকায় ও রোগীর সংখ্যা বেশি থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সেবা প্রার্থীদের।
বরগুনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ এ. কে. এম. নজমুল আহসান বলেন, চিকিৎসক সংকটে রোগীদের সেবা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। ডেঙ্গু রোগীর সাথে সাথে বাড়ছে শিশুরোগ। সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ইনফেকশন জনিত রোগ নিয়ে শিশু ভর্তি হচ্ছে। এ ছাড়া ডেঙ্গুরোগ নিয়েও শিশুরা আসছে। তবে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়লেও হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী আছে।