বাংলাদেশে আগামী দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত বলে সেনাপ্রধান যে মন্তব্য করেছেন, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, তার দল আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কার্যকর কোনো সংস্কার বা নির্বাচন করা অসম্ভব।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয় ১৮ মাসের সময়সীমাকে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক দেরি বলে উল্লেখ করলেও তিনি এতেই খুশি বলে জানান। তিনি এটাও উল্লেখ করেন যে, তার দল (আওয়ামী লীগ) ছাড়া প্রকৃত সংস্কার এবং নির্বাচন অসম্ভব।
অভ্যুত্থানের মুখে হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর পুলিশে অচলাবস্থা তৈরি হলে সেনাবাহিনী স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কাজ শুরু করে। সেনাপ্রধান জানিয়েছেন, তিনি প্রতি সপ্তাহে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপের জন্য দেখা করেন।
রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের আগে বিচার বিভাগ, পুলিশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তবে এই কাজ শেষ করার জন্য কোনো তারিখ নির্ধারণ করেনি।
ইউনূসের কার্যালয় জানিয়েছে, সরকারের গঠন করা ছয়টি সংস্কার প্যানেলের সুপারিশ পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে। সবাই সংস্কারের বিষয়ে একমত পোষণ করলে এবং ভোটার তালিকা তৈরি হলে ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আমাদের অন্তত এখন একটি প্রত্যাশিত সময়সীমা (নির্বাচন আয়োজনে) আছে জেনে আমি খুশি। তবে আমরা এই নাটক আগেও দেখেছি, যেখানে একটি অসাংবিধানিক-অনির্বাচিত সরকার সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তারপর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।
হাসিনার সাবেক এই উপদেষ্টা, তিনি নিজে অথবা অন্তর্বর্তী সরকার কেউই কারও সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে যোগাযোগ করেনি। সবচেয়ে পুরনো ও বৃহত্তম রাজনৈতিক দলকে (আওয়ামী লীগ) বাদ দিয়ে বৈধ সংস্কার ও নির্বাচন করা অসম্ভব।
নির্বাচনী সংস্কার প্যানেলের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, নির্বাচন বিষয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে কি না সেটা সরকারের ওপর নির্ভর করছে।
সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/latest/
হাসিনা কবে দেশে ফিরতে পারেন জানতে চাইলে জয় বলেন, এটি তার (হাসিনার) ওপর নির্ভর করছে। এই মুহূর্তে আমি আমার দলের লোকদের নিরাপদ রাখতে চাই, তাই আমি ইউনূস সরকারের হাতে নেতা-কর্মীদের ওপর চালানো নৃশংসতা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সচেতনতা বাড়াতে চাই।
আগস্ট মাসে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে হাসিনা দিল্লিতে আশ্রয় নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের আরও অনেক সিনিয়র নেতাকে হয় গ্রেপ্তার করা হয়েছে অথবা তারা নিজেরাই আত্মগোপনে চলে গেছেন।
জয় সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন, হাসিনার পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।
জয়ের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চেয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিরা জয়ের বিবৃতির ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি।