ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্ট শাহ মুহাম্মদ মাসুমসহ ১৫ জনের নামে আদালতে একটি মামলা হয়েছে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আক্তারুজ্জামানের আদালতে এই মামলা করেন তোফাজ্জলের বোন আসমা আক্তার।
মামলায় অন্য যাদের আসামি করার আবেদন করা হয়েছে তারা হলেন- পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী জালাল মিয়া, মাটি-পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ফিরোজ কবির, একই বর্ষের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুস সামাদ, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী মো. মোত্তাকিন সাকিন শাহ, ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী আল হুসাইন সাজ্জাদ, সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াজিবুল ইসলাম, গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ, একই বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বী, ফার্মেসি বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী মো. ইয়ামুস জামান, মাটি, পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী রাশেদ কামাল অনিক, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার কবির শোভন, একই বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান ইমরান এবং প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী মো. সুলতান।
সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/latest/
গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা পৌনে ৮টার সময় একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে সে মোবাইল চুরি করেছে বলে এলোপাতাড়ি চর থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারে। তাকে জিজ্ঞাসা করলে তার নাম তোফাজ্জল বলে জানায়। পরবর্তী সময়ে সে মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়। পরে ফজলুল হক মুসলিম হলের দক্ষিণ ভবনে গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পিছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধরক মারধর করলে তিনি অচেতন হয়ে পরে।
এ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানালে তাদের সহায়তায় অচেতন যুবককে ধরাধরি করে মেডিকেলে নেওয়া হয়। পরে ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দিবাগত রাত পৌনে ১টার সময় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তোফাজ্জলের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নে। এই ঘটনার পরদিন ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। পরে ৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা এরই মধ্যে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। ৬ শিক্ষার্থী হলেন—জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, মো. মোত্তাকিন সাকিন, আল হোসেন সাজ্জাদ, আহসান উল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম।