ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সব ওয়ার্ডে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচি শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) থেকে একযোগে শুরু হওয়া এই বিশেষ কর্মসূচি ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিচালনা করা হবে। সপ্তাহব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচির প্রথম দিনে ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলেই একযোগে জনসচেতনতা ও মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। শিক্ষার্থীরাও ডিএনসিসি’র এই সপ্তাহব্যাপী জনসচেতনতা কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ডিএনসিসির অঞ্চল-৩ এর আওতাধীন বাড্ডা এলাকায় ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম সপ্তাহব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এসময় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মীর খায়রুল আলম বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি কর্পোরেশন নিয়মিত মশা নিধনে কাজ করছে। এই সময়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে তাই একযোগে ডিএনসিসি’র সব ওয়ার্ডে বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। বিশেষ এই কর্মসূচিতে ডিএনসিসির দৈনন্দিন মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়াতে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে৷ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও ডিএনসিসির জনসচেতনতা কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। আমাদের সাথে মাঠে আছে বিএনসিসি, স্কাউট এবং গার্লস গাইডের সদস্যরা। সকলের সম্পৃক্ততায় বিশেষ এই কার্যক্রম ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জনগণের সহযোগিতা পেলে ডেঙ্গু সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সম্ভব। সাধারণত বাসাবাড়িতেই জমে থাকা পানিতে এডিস মশার জন্ম হয়। আমাদের কর্মীরা বাসাবাড়ির আশপাশ পরিষ্কার করে এবং ওষুধ ছিটায়। কিন্তু বাসাবাড়ির ভিতরে আমাদের কর্মীরা কাজ করতে পারে না৷ তাই নিজেদের বাসাবাড়িতে ফ্রিজ, এসি, ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।’
সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/latest/
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মীর খায়রুল আলম বলেন, ‘শুধু বর্ষা মৌসুমে নয়, ডিএনসিসি’র মশক নিধন কার্যক্রম সারা বছর জুড়েই পরিচালনা করা হয়েছে। এর আগেও আমরা একাধিক জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান করেছি, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি। এসব গৃহীত কার্যক্রমের ফলেই বিগত সময়ের তুলনায় এবছর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেক কম। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এখন কিছুটা বেড়েছে, তাই আমাদের কার্যক্রম জোরদার করেছি। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিতসহ সকল মানুষকে সম্পৃক্ত করে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে পদক্ষেপ নিয়েছি।’
সাংবাদিকের আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘আজ থেকে ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে৷ শুরুতে তারা সবাইকে সচেতন ও সতর্ক করবে। কিন্তু তারপরও যদি অবহেলার কারণে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আগে ওয়ার্ড কাউন্সিলররা মশক নিধন ও পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম তদারকি করতো। বর্তমানে অনেক কাউন্সিলররা কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও এই কার্যক্রম তদারকি যেন ব্যহত না হয় সেজন্য ডিএনসিসির বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তদারকি টিম করে দেয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা সব ওয়ার্ডের এই কার্যক্রম তদারকি করছে।’
কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম শিক্ষার্থীসহ সকলকে নিয়ে মেরুল বাড্ডা ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে একটি জনসচেতনতামূলক র্যালি করেন। র্যালি শেষে কয়েকটি বাড়িতে পরিদর্শন করেন তিনি। এসময় সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচিতে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী, অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জুলকার নায়ন এবং উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে: কর্ণেল রুবাইয়াত ইসমত অভীক প্রমুখ।