
রাজশাহী চারঘাট পৌরসভার মেয়র, পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী এবং হিসাব রক্ষক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা লুট করার অভিযোগ উঠেছে। আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার কারনে কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারেনি। পক্ষান্তরে মেয়র ক্যাডার বাহিনী কর্তৃক হুমকি দিয়েছে। তারা নগর উন্নয়ন প্রকল্পের নামে টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে বিভিন্ন মহলের দাবি।
পৌরসভার বিবিধ উন্নয়নের নামে টাকা লুটের বিষয় অনুসন্ধান তথ্যমতে সাবেক পৌর মেয়র ও পৌর আ’লীগ সম্পাদক একরামুল হক গত ২৪ মার্চ ২০২১ তারিখে এই পৌরসভার দায়িত্ব গ্রহন করেন। প্রায় ৩বছরেরও কিছু সময় মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি গত ১৮ আগষ্ট ২৪ তারিখ শেষ অফিস করেন। বিগত ৩ বছরের বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ তার মাধ্যমে সমাপ্ত হয়েছে।
কিন্ত নির্মাণ কাজের উপকরন গুলো ছিল নিম্ন মানের এবং কাজের বিলের পরিমান ছিল বাস্তবতার বিপক্ষে। তবে ইউজিপ এর প্রকল্পের কোটি কোটি টাকার কাজের বিল কাগজ কলমে ঠিক থাকলেও বাস্তবায়ন খুবই নি¤œমানের বলে অভিযোগ করেছেন পৌরবাসীসহ বিভিন্ন মহল।
পৌরসভার অফিস গোপন তথ্য মতে জানা যায়, পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম এবং হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা এম এস আসাদ উজ-জামান (বাচ্চু) মেয়র সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত ছিল। তাদের ৩ জনের সমন্বয়ে কোটি কোটি টাকা লুট হয়েছে। তারা উভয় প্রকল্প কাজের মাধ্যমেই অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/latest/
ইউজিপ প্রকল্পের আওতায় ১২টি বস্তি উন্নয়নের নামে বরাদ্দ হলেও দৃশ্যমান কিছুই পাওয়া যায়নি বরং প্রায় ৬ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। অফিসের ১০টি এসি ও গাড়ি মেরামতের নামে ৩০ লক্ষ টাকা, সিসি ক্যামেরা ও ডিজিটাল হাজিরা বাবদ ৩ লক্ষ টাকা, পৌরসভার প্রধান ফটক ও ফুলের বাগানের নামে ২৭ লক্ষ টাকা. মটর গ্যারেজের নির্মাণে ১২ লক্ষ টাকা এবং প্রত্যেক মাসে গাড়ির জ¦ালানী ও অতিথি আপ্রায়নের নামে ৭০ হাজার টাকা লুট করা হয়েছে।
প্রকল্পের টাকা বাদ দিয়েও রাজস্ব আয় থেকে অনুমান ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে। এছাড়া মাস্টাররুলে কর্মচারীর নামে অতিরিক্ত অর্থ উত্তলোন এবং চলমান প্রকল্পের অতিথি আপ্রায়নে অসংখ্য বেনামে বিল ভাইচার করে প্রতিমাসে গড়ে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা লুট করছে বলে, অভিযোগ উঠেছে ওই ৩ জনের সিন্ডিকেটের নামে। তবে তাদের পৃর্থক সম্পদের তথ্য খুজতে গেলে জানা যায়, মেয়রের একজন ঠিকাদার এবং তার ৫০ অধিক পুকুরের ব্যবসা রয়েছে। যা তিনি মেয়র থাকাকালিন সময়ে করেছেন।
অপরদিকে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম গত একযুগ ধরে এই পৌরসভায় চাকুরী করছেন। তার চৌকশলতায় ঢাকায় বেনামে একাধিক জমির প্লট এবং ফ্লাট রয়েছে। বর্তমান তার পরিবার ঢাকায় বসবাস করছে। অপরদিকে হিসাব রক্ষক ওই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত রয়েছে বলেছে অভিযোগ উঠেছে।
হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা এম এস আসাদ উজ জামান (বাচ্চু) পত্রিকার প্রতিনিধিকে বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগটি তিত্তিহীন এর কোন সত্যতা নেই। একইভাবে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান, মেয়র সর্বাধিক ক্ষমতার অধিকারী। প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়রের কথা মতো অফিসের সকলকে করতে হতো। কিন্ত তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ বা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত অভিযোগটি সত্য নয়। তবে সাবেক মেয়র একরামুল হকের অবস্থান সুনির্দিষ্ট না থাকার কারনে কোন বক্তব্য নেযা সম্ভব হয়নি।
সার্বিক বিষয়ে এডিসি টুকটুক তালুকদার (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ) পত্রিকার প্রতিনিধিকে বলেন, অন্তর্বতী সরকারের আদেশে সদ্য এই পৌরসভার দায়িত্ব গ্রহন করা হয়েছে। এই পৌরসভায় কোন অনিয়ম বা দুর্নীতি প্রমান হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।