বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয়ের তালিকায় নিঃসন্দেহে প্রথম সারিতে থাকবে চায়ের নাম। বন্ধু বা প্রিয়জনের সঙ্গে আড্ডায়— চা ছাড়া যেন জমে না। অনেকেরই আবার সারাদিনে কয়েক কাপ চা খাওয়ার অভ্যাস আছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্যমতে, পানির পরে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পান করা তরল পদার্থ হলো চা। এমনিতে চা খাওয়া খারাপ নয়, কিন্তু কিছু অভ্যাসে শরীর বিগড়ে যেতে পারে। বলা হয়ে থাকে অনিয়ন্ত্রিত বা অনিয়মতান্ত্রিক কোন কিছুই ভালো নয়।
তবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় দেখা যায়, আমরা অফিস থেকে ফিরে গুছিয়ে বসে এক কাপ চা না খেলে ঠিক চাঙ্গা হয় না শরীর। ফিরতে যত রাতই হোক, চা খান অনেকেই। আবার রাত জাগার জন্যেও অনেকে বার বার চা খান। রাত করে চা খাওয়ার অভ্যাস একেবারেই ভালো নয়। চায়ে থাকা থিয়োফাইলিনস মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে দীর্ঘক্ষণ। সহজে ঘুম আসতে চায় না। রাতে চা খাওয়ার অভ্যাসে অনিদ্রা রোগ দেখা দিতে পারে। ঘুমাতে যাওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে চা না খাওয়াই শ্রেয়।
ভারী খাবারের সঙ্গে চা খেতে বারণ করছেন চিকিৎসকরা। এতে প্রথমত হজমের একটা গোলমাল দেখা দেয়। তবে সবচেয়ে যে সমস্যাটি হয়, তা হলো শরীরে আয়রনের পরিমাণ কমে যায়। ঝুঁকি বাড়ে অ্যানিমিয়ার। লিভারেরও নানা সমস্যা হতে পারে এর ফলে। তাই ভাত, রুটি, বিরিয়ানি এবং অন্য কোনো ভারী খাবারের সঙ্গে চা না খাওয়াই শ্রেয়।
সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/latest/
খালি পেটে চা খাওয়ার অভ্যাস ঘরে ঘরে। ঘুম থেকে উঠে চা-এ চুমুক দেন বেশির ভাগই। এতে ঘুম আর আলসেমি কাটলেও অম্বল হওয়ার ঝুঁকি থাকে। খালি পেটে গরম চা খাওয়া একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। এর ফলে পেপটিক আলসার, গ্যাস-অম্বল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই চায়ের কাপে চুমুক না দিয়ে বরং একটা বিস্কুট খেয়ে তার পর চা খাওয়া ভালো।
চা সম্পর্কে যা জানা জরুরি
যারা নিয়মিত চা পান করেন, যাদের কাছে বিষয়টি অনেকটাই অভ্যাসে পরিনত হয়ে গেছে এতদিনে, তারা নিজেদের রুচি ও মর্জি মতই হয়তো সেটি করবেন।
* খাবার খাওয়ার অন্তত আধা ঘণ্টা আগে অথবা খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা পরে চা পান করা উচিৎ।
* বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে চায়ের সঙ্গে দুধ বা চিনি মিলিয়ে খাওয়ার এক ধরনের প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু ২০০২ সালে হিউম্যান নিউট্রিশন রিসার্চ সেন্টারের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এক কাপ চায়ে ৫০ গ্রাম দুধ মেশানো হলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা ৯০ শতাংশ কমে যায়।
আর ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে গেলে শরীরের ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ক্ষমতাও কমে যায়।
এছাড়াও চায়ের মধ্যে দুধ মেশালে ভাস্কুলার সিস্টেমের উপর উপকারী প্রভাব কমে যায়।
* চা খাবার হজমে সহায়তা করে।
* চায়ের সঙ্গে ভিটামিন সি খেলে এর গুণাগুণ অনেকাংশে বেড়ে যায়। তবে পুরোপুরি গরম চায়ের সঙ্গে ভিটামিন সি মেলালে এর কার্যকারিতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ভিটামিন সি চা খাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে মেশানো ভালো।