ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশি সহিংসতার প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্ধের ডাক দিয়েছে বিজেপি।
বুধবার (২৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই বনধে বিজেপি কর্মীদের সাথে পুলিশ ও রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের সাথে সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩০ জনের বেশি।
সকাল থেকে বিজেপির ‘বাংলা বন্ধ’ কর্মসূচিতে তেমন কোনো প্রভাব না পড়ার পাশাপাশি রাস্তায় বাস চলাচল করতে দেখা গিয়েছে, দোকান-পাটও খুলেছে। বাজারেও তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে কর্মসূচি সফল করতে মরিয়া বিজেপি কর্মীরা সকাল থেকেই বাস সড়কের পাশাপাশি শুরু করেছেন রেল সড়ক অবরোধ। এতে সকাল থেকে রাজ্যের একাধিক জায়গায় উত্তেজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক বিজেপি কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
এদিন সকাল ৬টায় বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়ার নেতৃত্বে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা আসেন বনগাঁ স্টেশনে। তারপর তারা রেল স্টেশনে অবরোধ করে দেন।
রেল সূত্রে জানা গেছে, শিয়ালদহ থেকে লক্ষ্মীকান্তপুর, কাকদ্বীপ, নামখানাগামী ট্রেন চলাচল বন্ধ। ট্রেন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় সকাল থেকেই ওই লাইনের একাধিক স্টেশনে দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন যাত্রীরা। ট্রেন না পেয়ে অনেকেই সড়ক পথে রওনা দিয়েছেন নিজেদের গন্তব্যের উদ্দেশে।
এছাড়া কোচবিহারে বন্ধ পালন করতে গিয়ে বিজেপির দুই বিধায়ক আটক হয়েছেন বলে জানা যায়। এ দিন সকালে কোচবিহারে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহনের নতুন বাসস্ট্যান্ডের সামনে বিক্ষোভ অবস্থানে বসেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। সেখানেই পুলিশের সঙ্গে বচসা হয় তাঁদের। পরে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/latest/
উত্তেজনা ছড়িয়েছে উত্তরবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট সরকারি বাস স্ট্যান্ডের সামনে। একদিকে, বন্ধের সমর্থনে যখন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা পিকেটিং করছে, তখন বন্ধের বিরোধিতায় পথে নেমেছে তৃণমূলও। দুই দলের সমর্থকদের স্লোগান, পাল্টা স্লোগানে উত্তপ্ত এলাকা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এ সময় ‘বাংলা বন্ধ’ কর্মসূচি সফলের উদ্দেশে বাজারের দোকানপাট জোর করে বন্ধ করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় বিজেপির টাউন সভাপতি সমীরপ্রসাদ দত্তকে।
এদিকে বন্ধের মধ্যেও সরকারি বাস পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত বাস নামিয়েছে রাজ্য সরকার। বাস পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে কলকাতা শহরতলীজুড়ে হেলমেট পড়ে ডিউটি করছেন বাসের ড্রাইভার ও হেল্পাররা।
কলকাতায় সকাল থেকে ধর্মঘটের তেমন প্রভাব পড়েনি। দোকানপাট খুলেছে। মেট্রো চলাচল রয়েছে স্বাভাবিক। তবে বেসরকারি বেশ কিছু বাসরুট বন্ধ থাকায় গণপরিবহনে প্রভাব পড়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার রাজ্যের সচিবালয় নবান্ন অভিমুখে শিক্ষার্থীদের নবগঠিত সংগঠন ছাত্র সমাজ পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করে। এই কর্মসূচিতে রাজ্যের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থী-জনতার সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশি সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে বাংলা বনধ কর্মসূচি ঘোষণা করে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী রাজনৈতিক দল বিজেপি।