দেশ গোছাতে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিএনপি সময় দিতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ক্ষেত্রে বিএনপি তাদের সব ধরনের সহায়তা করবে বলেও জানান তিনি।
রোববার (২৫ আগস্ট) বিকেলে সিলেট এয়ারপোর্ট এলাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকাকালে গণতন্ত্রকে লাশ বানিয়ে ফেলেছে। রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে দিয়েছে। হাসিনা তিন-তিনবার এক তরফা নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে নষ্ট করে দিয়েছেন। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস যোগ্য মানুষদের নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছেন। দেশের পরিবেশ ঠিক করে দ্রুত নির্বাচন দেবেন। অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দিতে চায় বিএনপি। তাদের সব ধরনের সহায়তা করবে। অনেক জায়গায় সংস্কার, তাই তাদের যৌক্তিক সময় দেব, তবে তা দীর্ঘ নয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ৩১ দফা সংস্কার-দাবি দিয়েছে বিএনপি, সেগুলো নিয়ে কাজ করবেন বলেও জানান ফখরুল।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে বিরোধিতা করায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর এক লাখ ৪৫ হাজার গায়েবি মামলা দিয়েছে। এসব মামলায় ৬০ লাখ আসামি রয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আন্দোলনের মধ্য দিয়েই খালেদা জিয়া মুক্ত হয়েছেন। তিনি কখনও মাথা নত করেননি। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমরা আইনিভাবে মোকাবিলার চেষ্টা করছি। আমরা ইলিয়াস আলীসহ গুম হওয়া সবাইকে নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। জাতিসংঘের একটি তদন্ত দলও এসেছে। আমরা আশাবাদী- সঠিক তথ্য পাব। সরকারও সুনির্দিষ্টভাবে এখনও কিছু বলেনি। আমরা তাদের অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানতে চাই।’
সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/latest/
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের একটি অংশ ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। গত ১৫ বছরে এমন আকস্মিক বন্যা আমরা দেখিনি। ভারত তাদের বাঁধ খুলে দেওয়ায় এই ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। তারা বাঁধ খুলে দেওয়ার আগে কোনো পূর্বাভাসও দেয়নি। উজানের পানির বেশিরভাগ ভারত থেকে আসে। তিনি বলেন, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের কোনো সুরাহা আজও হয়নি। পানি আগ্রাসনকে ভারত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। সিলেট থেকে এই পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল। এম ইলিয়াস আলী এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে তাকে গুম করা হয়েছে।
মত বিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী, উপদেষ্টা ও ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতাহ সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিমানযোগে সিলেটে আসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে নেতাকর্মীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল (র.) ও শাহপরাণের (রা.) মাজার জিয়ারত করেন।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর সিলেটে প্রথম সফরে এসেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।