বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) কর্তৃক ম্যাটস, ডিএমএফ এবং এলএমএফ পাশ করা মেডিকেল সহকারীদের ডিপ্লোমা মেডিকেল প্র্যাক্টিশনার হিসেবে বিবেচনা করার প্রতিবাদে লংমার্চ আহ্বান করেছেন চিকিৎসকরা। বুধবার সকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা এবং খুলনার বিভিন্ন বেসরকারী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকেরা শিববাড়ি মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন।
সমাবেশ থেকে বিএমডিসি কর্তৃক ম্যাটস, ডিএমএফ ও টুএমপি পাশ করা এবং মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টদের ডিপ্লোমা মেডিকেল প্র্যাক্টিশনার হিসেবে বিবেচনা করায় তীব্র নিন্দা জানানো হয়। এ ছাড়া নিজেদের অস্তিত্ব ও অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে সবার সহযোগিতা কামনা করেন চিকিৎসকরা। তারা বলেন, ‘চিকিৎসক ছাড়া অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সাদা অ্যাপ্রোন পরা ও নামের আগে ডাক্তার পদবী লেখার কোনো অধিকার নেই৷’ চিকিৎসকরা বলেন, অনেক মেডিকেল কলেজ চিকিৎসকদের বেতন ভাতা দিচ্ছে না। এসব মেডিকেলকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে৷ প্রয়োজনে তাদের বন্ধ করে দিতে হবে। তারা বলেন, ডিপ্লোমাদের জন্য আলাদা কাউন্সিল করতে হবে৷ এ সময় বিএমডিসি অ্যাক্ট পরিবর্তনের দাবি তুলেন তারা। সে পর্যন্ত বিএমডিসিকে নিস্ক্রিয় রাখারও আহ্বান করেন৷
তাদের দাবিগুলো হলো- এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কাউকে বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন দেয়া যাবে না। এখন পর্যন্ত যত ডিটিটি, বিএসসি, স্যাকমো, ডিএমএফ ও এমটি বের হয়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছে তাদের চেম্বার বন্ধ করে দিতে হবে এবং বিডিএস, এমবিবিএস ছাড়া কেউ চেম্বার দিতে পারবে না। তারা রোগীর মুখে হাত দিতে পারবে না। দিলে তাকে জেল জরিমানার আওতাভুক্ত করতে হবে। সকল ফার্মেসিতে এমবিবিএস ও বিডিএস ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রি বন্ধ করতে হবে। শুধু ডাক্তার, মেডিকেল ও ডেন্টাল স্টুডেন্ট ছাড়া অন্য কেউ সাদা অ্যাপ্রোন পড়তে পারবে না।
সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/latest/
এমবিবিএস ও বিডিএস ডাক্তার ছাড়া অন্য কেউ ডাঃ পদবী ব্যবহার ও লিখতে পারবে না। বিএসসি টেকনোলজিস্ট বন্ধ করতে হবে। টেকনো সিলেবাস আজীবনের জন্য বন্ধ করতে হবে। টেকনো সিলেবাস পরিবর্তন করে ইউকে সিলেবাস করে (এমবিবিএস ও বিডিএস) ডেন্টাল টেকনিশিয়ানের সিলেবাস করে দিতে হবে। এমবিবিএস ছাড়া অন্য কেউ আল্ট্রা করতে পারবে না। চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা দিতে হবে। ইন্টার্ন ও পোস্টগ্রাজুয়েট চিকিৎসকদের বেতন-ভাতা বাড়াতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব ডব্লিউএফএমই এক্রিডিটেশন, ইন্টার্নশিপ ও কলেজের যৌক্তিক মাইগ্রেশন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ২দিন ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে। স্বাস্থ্য ক্যাডারে বিসিএস পরীক্ষা হতে হবে শুধু মেডিকেলের সিলেবাসে। যাকে যখন ইচ্ছা অযৌক্তিক কারণে বদলি করা যাবে না।
কোন স্টুডেন্টকে অযৌক্তিক কারণে ফেল করানো যাবে না। কোন লবিং করা যাবে না। কোন যৌন হয়রানির মাধ্যমে পাশ-ফেল করানো যাবে না। এই বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দিতে হবে। এমবিএস এবং বিডিএস প্রফেশনাল পরীক্ষায় যে সাবজেক্টের যে অংশে ফেল করবে শুধু সে অংশের পরীক্ষা নিতে হবে। বিডিএসদের একসাথে একদিনে কমবাউন্ড সাবজেক্টের যে কোন একটা সাবজেক্টের রিটেন, ভাইভা ও অম্পি নিতে হবে। প্রফ পরীক্ষার ফি সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে একই পরিমাণে রাখতে হবে। প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের বেতন সর্বোচ্চ ৭ থেকে ৮ হাজার হতে হবে। অযৌক্তিক জরিমানা বন্ধ এবং প্রাইভেট মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের বেতন একসাথে ৬০ মাসের বেশি না নেয়ার নির্দেশনা দিতে হবে। জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রোপার কর্মসংস্থান তৈরি করতে সহায়তা করতে হবে। সরকারি এবং বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর নিজস্ব ক্যাম্পাস ও হাসপাতাল রাখতে হবে। যেসব কলেজের নিজস্ব ক্যাম্পাস ও হাসপাতাল নেই, তাদেরকে দ্রুত ব্যবস্থা করতে হবে।