বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের গণমিছিল

বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের গণমিছিল

রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে গণমিছিল করেছে।

শুক্রবার (২ আগস্ট) সকাল থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, চিকিৎসক, কবি, লেখক, পেশাজীবী, অভিভাবক, শিল্পীরা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে।বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম, সায়েন্সল্যাব, মিরপুর, শাহবাগ, হাইকোর্ট, প্রেস ক্লাব, পল্টন, শহিদ মিনার, ইসিবি চত্বর, বাংলামোটর, আফতাবনগর, উত্তরা ও ধানমন্ডির সামনে থেকে গণমিছিল শুরু করেন আন্দোলনকারীরা।

 

ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন

বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজধানী ঢাকার উত্তরায় রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের সামনে সকাল ১০টার দিকে গণমিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন কলেজের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক ও অভিভাবক। এ সময় শিক্ষার্থী হত্যার বিচারের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে চারপাশ।অন্যদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর আফতাবনগরে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে থেকে গণমিছিল শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালের শিক্ষার্থীরা। গণমিছিলটি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে থেকে শুরু হয়ে রামপুরা ব্রিজ ঘুরে ব্র‍্যাক ইউনিভার্সিটির সামনে যায়।এরপর ব্র‍্যাক ইউনিভার্সিটি থেকে গণমিছিলটি আবারও রামপুরা ব্রিজ হয়ে দুপুর ১২টার দিকে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে গিয়ে শেষ হয়।

এদিকে দুপুরে জুমার নামাজের পর ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সায়েন্সল্যাব মোড়ে গণমিছিলে অংশ নেন। জানা গেছে, দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে সায়েন্সল্যাব মোড়ের বায়তুল মা’মুর জামে মসজিদের সামনে থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর আড়াইটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক পরিষদ এবং কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।

অন্যদিকে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে দ্রোহযাত্রার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদ মিনারে এসে জড়ো হন। তাদের স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। এর আগে, আড়াইটার দিকে প্রেস ক্লাব থেকে শহীদ মিনারের উদ্দেশ্য দ্রোহযাত্রা শুরু করেন শিক্ষক-জনতা। দ্রোহযাত্রার সভাপতিত্ব করেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। দ্রোহযাত্রাটি জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এসে পৌঁছায় বিকাল চারটায়। এতে শিক্ষার্থী, সাধারণ জনতার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষক, মানবাধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের অংশ গ্রহণে শহীদ মিনার জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

এছাড়া সকালে বাংলামোটরে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সামনে বিক্ষুব্ধ ‘কবি-লেখক সমাজ’ ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। তারা জানান, সমাজে প্রতি পায়ে-পায়ে ভয়।কিন্তু এই শিক্ষার্থীরা কোনো ভয় পান না। তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য পথে নেমেছে। আর কোনো শিক্ষার্থী যেন হয়রানি ও গুলির শিকার না হন। যেসব জায়গায় হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেখানের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিচারের আওতায় আনার দাবি করেন।

শুক্রবার বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজ শেষে গণমিছিল শুরু করেন কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বায়তুল মোকাররম থেকে পল্টনের দিকে যেতে থাকে। পরে শাহবাগ পৌঁছালে মিছিলটি আটকে দেয় পুলিশ। জুমার নামাজের পর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ছাত্র-জনতার ব্যানারে পূর্ব ঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা দ্রুত নয় দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। পরে তারা প্রেস ক্লাবের অবস্থান ছেড়ে হাইকোর্টের সামনে দিয়ে শাহবাগের দিকে চলে যান।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতার ঢল
 

এদিকে বিকেলে মিরপুরের ইসিবি চত্বরে শিক্ষার্থীরা সমবেত হয়ে বিক্ষোভ করে। শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার বিচারের দাবিতে নানা স্লোগান দেয় এবং আটক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি জানান। অন্যদিকে সকালে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিল্পী ও সাধারণ মানুষ ধানমন্ডির আবাহনী মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে ছাত্র-জনতা হত্যার প্রতিবাদে শামিল হন।তারা নিহতের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ এবং হত্যার দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগের দাবি জানান ।

শেয়ার করুন:

Recommended For You