আমি রাত বারোটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছিলাম। পুরো ক্যাম্পাস পায়ে হেঁটে দেখে এসেছি। ক্যাম্পাস এই মুহূর্তে শান্ত, নির্বিঘ্ন। ছাত্ররা সবাই হল ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। ছাত্রী হলে গুটিকয় ছাত্রী থেকে যেতে বাধ্য হয়েছে। তারা আগামীকাল সকালে হল ত্যাগ করবে।
ক্যাম্পাসে কোন সংঘাত চলছে না। পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ আছে। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা আছেন। ক্যাম্পাসের আবাসিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের পরিবারসহ আছেন। ক্যাম্পাসে হলের বাইরেও যেসব শিক্ষার্থী (বিশেষত নারী শিক্ষার্থী) কর্মচারী কোয়ার্টারে সাবলেট থাকেন, তাদের অনেকেই এখনও আছেন। অনেক ছাত্রী পলাশী, আজিমপুর এসব এলাকার ছাত্রী মেসে নিরাপদ আশ্রয়ে আছে বলে নিশ্চিত হয়েছি। ছাত্রদের অনেকেই পলাশী, বকশিবাজার, চানখাঁরপুল এলাকার মেসগুলোতে আপাতত আশ্রয় নিয়েছে। যাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে তারা আত্মীয়দের বাসা, স্থানীয় বন্ধুদের বাসা এবং অনেকেই ঢাকার বাইরে নিজের বাসায় চলে গেছে।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন
ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস এবং ইন্টারনেট সংযোগ আছে। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা তাদের নিজ নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বাত্মক সাহায্য করতে প্রস্তুত আছেন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে ছাত্রদেরকে এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। আমার নিজ বিভাগের প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর দায়িত্ব বিভাগের শিক্ষকরা নিয়েছেন, তারা যেকোন প্রয়োজনে আমাদেরকে পাশে পাবে। বিভিন্ন বিচিত্র নামের ফেসবুক পেজ থেকে যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, ফেইক ভিডিও তৈরি করে অরাজকতা ও আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছে, সেগুলোতে বিভ্রান্ত হবেন না।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুঁজি করে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধি করতে চাইছে যারা, তাদের কথায় ভ্রষ্ট হবেন না। সময় দিন সবাইকে। নিশ্চয়ই আবার সব সুন্দর হয়ে যাবে। ক্যাম্পাসের কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো অপেক্ষা করছে।
লেখক: সোনম সাহা
শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।