কোটা সংস্কার আন্দোলনে যাওয়াকে কেন্দ্র করে ইবি শিক্ষার্থীকে মারধর

কোটা সংস্কার আন্দোলনে যাওয়াকে কেন্দ্র করে ইবি শিক্ষার্থীকে মারধর

কোটা আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াউর হলের ৪২০ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের পর তাঁকে হল থেকে নেমে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। পরে বিকেলে এ ঘটনায় বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মাহফুজুল হক। তিনি আইন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হলেন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিজ। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী বলে জানা গেছে।

সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/latest/

অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার সকাল ১১টার সময় রুমের সামনে এসে ছাত্রলীগের কর্মী সোহানুর প্রোগামে যাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করে। এর কিছুক্ষণ পর শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিজ কক্ষের সামনে আসে এবং রবিবার রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ মিছিলে গিয়েছিলাম কি-না জানতে চায়।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে যাওয়াকে কেন্দ্র করে ইবি শিক্ষার্থীকে মারধর

আমি গিয়েছি জানার পর, তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মিছিলে যাওয়ার কারণ জানতে চান। তখন তিনি আমাকে বলে, ‘তুই কি রাজাকার? রাজাকার না হলে ওই মিছিলে গেলি কেন?’ আমি তাকে বললাম, ‘আমি রাজাকার হবো কীসের জন্যে? কোনটা ব্যঙ্গার্থক আর কোনটা আসলেই সেটা তো আপনার বোঝা উচিত।’

কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে কক্ষে থাকা তিনি ঝাড়ু দিয়ে আমার মাথায় সজোরে আঘাত করেন। যার ফলে ঝাড়ু ভেঙ্গে গেছে। তিনি আরও মারতে উদ্যত হলে আমাকে ডাকতে আসা সোহান এবং সৌরভ হাফিজকে ঠেকায়।

যাওয়ার সময় তিনি হুমকি দিয়ে বলে যান,’ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম থেকে ফিরে যেন তোকে হলে না দেখি। যদি কেউ কিছু বলে, বলবি আমার নাম হাফিজ। তোর কে আছে দেখবোনে।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিজ বলেন, আমি ওর রুমে গিয়েছিলাম। পরে জানতে চেয়েছি ও কেন রাজাকার রাজাকার বলে চিল্লাইছে। মাহফুুজকে মারধর করা হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, মারধরের অভিযোগ সম্পন্ন ভিত্তিহীন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ  বলেন, অভিযোগপত্র পেয়েছি, তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর ওই শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার জন্য ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।

প্রতিবাদে মানববন্ধন

কোটা আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ মাহফুজুলের উপর যে সন্ত্রাসী হামলা করা হয়েছে, তা নিন্দাজনক। মাহফুজুল যদি কোন ভুল করে থাকে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে, এখানে হাফিজ কে ব্যবস্থা নেবার? আমরা হামলাকারী হাফিজের দ্রুত বিচার চাই।’

শেয়ার করুন:

Recommended For You