গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ধর্মপুর আব্দুল জব্বার ডিগ্রি কলেজে সরদার মো: মিজানুর রহমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ধর্মপুর আব্দুল জব্বার কলেজ কেন্দ্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অপর জন বরখাস্ত অধ্যক্ষ ছামিউল ইসলাম ফরম ফিলাপ ও ভর্তি সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করে অর্থ আদায় করছেন। ফলে ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ বিভ্রান্তিতে পড়েছে এবং প্রশাসনের ভুমিকা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গেছে, সাময়িক বরখাস্ত অধ্যক্ষ ছামিউল ইসলামের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক অভিযোগের সত্যতা পায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তার এমপিও স্থগিত করে। এ দিকে অনিয়ম দুর্নীতি নিয়োগ বাণিজ্য ও স্বেচ্ছাচারিতার ফলে কলেজের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৩ সালের ২৯ মার্চ ছামিউল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এ কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) নির্দেশ দেয়।
সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পেতে ভিজিট করুন https://worldglobal24.com/
সে মোতাবেক ইউএনও (সভাপতি) ওই বছরের ২ এপ্রিল/২০২৩ অধ্যক্ষ ছামিউল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এ বিষয়ে বরখাস্ত অধ্যক্ষ হাইকোর্টে রিট পিটিশন করলে কোন আদেশ পাননি। পরে একই বিষয়ে যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত গাইবান্ধায় একটি মামলা করেন। যার নম্বর ০৪/২০২৩। পরে মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন। আবার একই বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ সহকারি জজ আদালতে মামলা করেন, যার নম্বর অন্য ২৮৩/২০২৩। মামলাটি চলমান রয়েছে।
অপর দিকে বরখাস্ত হওয়ার ০৪ (চার) মাস পর ২৪ আগস্ট ২০২৩ সালে সোনালী ব্যাংক প্রধান শাখা, গাইবান্ধা হতে তথ্য গোপন করে কলেজ নামীয় হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
বরখাস্ত অধ্যক্ষের কলেজের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ গাইবান্ধা সদর থানা আমলী আদালত আরেকটি মামলা করে, যার নম্বর সিআর ৮২২/২৩ এই মামলায় সিআইডি তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন। বরখাস্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত রংপুরে একটি মামলা চলমান রয়েছে। যার নম্বর সিটি ১৪৩/২০২২।
সুযোগ বুঝে কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে কলেজ বন্ধ থাকা অবস্থায় লোকবল নিয়ে কলেজ গেটের তালা ভেঙ্গে অনুপ্রবেশ করেন বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ ছমিউল।
এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি মামলা দায়ের করে, যার নম্বর জিআর ১৩০/২৪ (স্দুরগঞ্জ)। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সরদার মো; মিজানুর রহমান, শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদান, সকল দাপ্তরিক কার্যক্রমসহ এইচএসসি ২০২৪ ধর্মপুর আব্দুল জব্বার কলেজ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব
পালন করছেন।
অপর দিকে ছামিউল ইসলাম নিজেকে অধ্যক্ষ দাবি করে গত ৩০ জন /২০২৪ পরীক্ষা কেন্দ্রে লোকবলসহ আনুমানিক ২:০০ ঘটিকার সময় প্রবেশ করে অধ্যক্ষ কক্ষের তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে। কন্ট্রোল রুমে ঢুকে সংশ্লিষ্ট সকলকে গালিগালাজসহ হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে বলে অভিযোগ
পাওয়া গেছে।
কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন যার নং সিআর ৩৯২/২৪। বিচারক সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলাটি এফ.আই.আর হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য আদেশ দেন।
উক্ত বিষয়ে ছামিউল ইসলাম বলেন- আমি এই কলেজের অধ্যক্ষ। বৈধতার বিষয় প্রশ্ন করলে তিনি কোন সদুত্তোর দেননি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সরদার মো: মিজানুর রহমান জানান ২৮ জনু ২০২৪ ইং তারিখে জেলা জজকোর্ট গাইবান্ধার বিজ্ঞ সহকারি কৌশুলীর (জিপি) মতামত অনুযায়ী বরখাস্ত অধ্যক্ষ ছামিউল ইসলাম অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পাারেন না। বরখাস্ত অধ্যক্ষ ডিগ্রী (পাস) ১ম বর্ষ ভর্তি ও ৩য় বর্ষ ফরম পূরণে ছাত্র/ছাত্রীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। একই কলেজে দুইজন দায়িত্ব পালন করতে পারে এটি আমার বোধগম্যতায় আসে না।
এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুন্দরগঞ্জ ও জেলা প্রশাসক গাইবান্ধাকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজটিকে
সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: তরিকুল ইসলাম বলেন-বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।