চট্টগ্রাম নগরীর বায়জিদ বোস্তামী সড়কের নাসিরাবাদে অবস্থিত কর্ণফুলি ওয়াশিং কারখানা দীর্ঘদিন ধরে চলছে পরিবেশ ছাড়পত্র ও ইটিপি ছাড়াই। ওয়াশিং কারখানা গুলির পরিবেশ ছাড়পত্র ও ইটিপি থাকা বাধ্যতামূলক থাকলেও কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে কর্নফুলী ওয়াশিং কারখানা বীরদপে চালিয়ে যাচ্ছে আজ দীর্ঘ দশ থেকে বারো বছর যাবৎ।
দেখে ও না দেখার মত বিভিন্ন প্রশাসন কে ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছেন এই কর্ণফুলি ওয়াশিং কারখানা। বন্দর শহর চট্টগ্রামের ব্যবসা বাণিজ্য দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। কিন্তু শিল্প কারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নিয়ন্ত্রণহীনতার কারণে পানি ও পরিবেশের দূষণ মাত্রা ছড়াচ্ছে। বিশেষত এই কর্ণফুলি ডায়িং এর বর্জ্যে পানি দূষণ চরম আকার ধারণ করেছে।
সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পেতে অনুসরণ করুন https://worldglobal24.com/
এরই মধ্যে চট্টগ্রামের প্রধান দুই নদী কর্ণফুলি ও হালদার দূষণে জলজ প্রাণীদের টিকে থাকাই ঝুঁকির মুখে পড়েছে।পরিবেশ দূষণের তালিকায় এই কর্ণফুলি ডায়িং থাকলেও কোন ব্যাবস্থা নেয়া হয়না। অথচ এসব কারখানা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।এই কর্ণফুলি কারখানার কাপড় ওয়াশ করার সময় যেসব কেমিক্যালযুক্ত তরল বর্জ্য বের হচ্ছে, সেগুলো ইটিপি ব্যবহার না করার কারণে সরাসরি ড্রেনের মাধ্যমে নগরীর বিভিন্ন খালে গিয়ে মিশছে। অনেক কারখানায় ইটিপি স্থাপনের কোনো জায়গায় নেই।
এই কারখানার তরল বর্জ্য গুলো নগরীর খালে মিশে যাচ্ছে এবং কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে। সাধারণত ওয়াশিং বা ডায়িং কারখানা ক্যামিকেল লাল ক্যাটাগরির হয়ে থাকে। এসব প্রতিষ্ঠানের তরল বর্জ্য পরিবেশের সঙ্গে মিশে সেটা বড় ক্ষতির কারণ হয়ে উঠছে। এই কর্ণফুলি কারখানা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।এই ব্যাপারে কর্ণফুলি কারখানার মালিক শিপন এর সাথে মুঠোফোনে এই প্রতিবেদক পরিবেশের ছাড়পত্র ও ইটিপি করা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বীরদপে বলেন নাই। তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি আজ দশ বারো বছর এইভাবে কারখানা চালিয়ে আসছি আপনি পারলে নিউজ করেন কেউ আমার কিছু করতে পারবেনা।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোহাম্মদ মনির হোসেন কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ কর্ণফুলি ওয়াশিং কারখানার কোন পরিবেশের ছাড়পত্র ও ইটিপি করা নাই,আমরা এই কারখানার মালিককে অফিসিয়াল চিঠি দিয়েছি। চিঠিতে বেধে দেয়া তারিখও শেষ হয়ে গেছে। আমরা খুব দ্রুত এই ব্যাপারে পদেক্ষেপ নিচ্ছি। পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করে কারখানা চালানোর ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বলেন এই ভদ্র লোক কে আমি চিনি ও না কখনো দেখি ও নাই বলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান এবং হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, এ তরল বর্জ্যের কারণে চট্টগ্রামের পরিবেশ বিনষ্ট তো হচ্ছেই, সঙ্গে কর্ণফুলী নদীর দূষণ বাড়ছে নিয়মিত। দূষণ কমাতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে আরো কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। এ তরল বর্জ্যের কারণে চট্টগ্রামের পরিবেশ বিনষ্ট তো হচ্ছেই, সঙ্গে কর্ণফুলী নদীর দূষণ বাড়ছে নিয়মিত। দূষণ কমাতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে আরো কঠোর অবস্থানে যেতে হবে।