মনের জোর কমে গেলেও বেড়েছে বিএনপির গলার জোর: ওবায়দুল কাদের

বিএনপি নেতাদের মনের জোর কমে গেছে, তবে বেড়েছে গলার জোর বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, একটা কথা আছে, মানুষের শক্তি যত কমে মুখের বিষ তত উগ্র হয়ে যায়।

বুধবার (৩ জুলাই) বিকেলে সাভারের হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ উদ্যোগে দলটির ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা কথা আছে, মানুষের শক্তি যত কমে, মুখের বিষ তত উগ্র হয়। বিএনপির নেতাদের মুখের কোনো ট্যাক্স নাই। তাদের মুখে কোনো লাগাম নাই। লাগাম দিয়ে টানবেন? লাগাম দিয়ে টেনে লাভ নাই। বিএনপি বেপরোয়া গাড়ি চালায়। কখন কোথায় দুর্ঘটনা ঘটে কেউ জানে না।

মন্ত্রী বলেন, বিএনপি কি চলে, না চালায়? কে চালায়? খালেদা জিয়া? বিএনপি চালায় লন্ডন থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে। সড়কপথে নয়, নদীপথে নয়, আকাশপথে বিএনপি চলে। আকাশপথে ডাক আসে। বিএনপির নেতাদের দিনের আহার, রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কখন তারেক রহমানের ডাক আসে, কখন কার চাকরি নট হয়ে যায়। মির্জা ফখরুল (বিএনপির মহাসচিব) সাহেবও শান্তিতে নাই। বড় বড় নেতারা আতঙ্কে আছে। কখন কার গদি শেষ হয়ে যায়, এজন্য তারা তারেক আতঙ্কে আছে। এজন্য তাদের রাতের ঘুম হারাম।

বিএনপির নতুন কমিটি সম্পর্কে তিনি বলেন, নতুন কমিটি কেউ জানে? নতুন কমিটি ভুয়া, বিএনপি ভুয়া। নতুন কমিটির নতুন কর্মসূচি ভুয়া। আন্দোলন কবে হবে? ঈদের পরে, এ বছর না পরের বছর। দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়, আন্দোলন আর হয় না। মরা গাঙ্গে জোয়ার আর আসে না। বিএনপির হাত, আন্দোলনের হাত ভেঙে গেছে। এখন পরনির্ভর। এখন তারা করছে পরনিন্দা, গীবত।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজই দুপুর বেলা শিক্ষকদের আন্দোলন এবং কোটা আন্দোলনে বিএনপি সমর্থন দিয়েছে। কোটা আন্দোলন আগেও ছিল এখনো আছে। তাদের ওপর ভর করে আন্দোলন করছে বিএনপি। পরনির্ভর হলে আন্দলন হয়? তারা ভয় দেখায় ভারত নিয়ে, তারা বলে বাংলাদেশ ইন্ডিয়া হয়ে গেল। তারা বলে শেখ হাসিনা ইন্ডিয়া গেলে কিছুই আনতে পারেন না। ৬৮ বছরের সীমান্ত সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে ২৫ বছরের মৈত্রী চুক্তি ছিল বলে ছিটমহল সমস্যা ও সীমান্ত সমস্যার সমাধান হয়েছে। গঙ্গা নদীর পানি আমরা বুঝে পেয়েছি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়া (প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে) তিন হাজার জামদানি শাড়ি নিয়ে ইন্ডিয়া গেছেন। চাকর-বাকর থেকে শুরু করে সবাইকে সমানে সমানে বিতরণ করেছে। ফিরে আসার পর তার কাছে গঙ্গার পানি নিয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গঙ্গার পানির কথা বলতে ভুলে গেছি’। গঙ্গার পানির কথা বলতে ভুলে যায়! কোন মুখে এখন বিএনপি নেতারা তিস্তার পানির কথা বলেন। তিস্তা নদীর হিস্যা ও অভিন্ন নদীর পানির হিস্যা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাই আনবেন। কারও কথায় বাংলাদেশ ইন্ডিয়া হবে না। ৫৩ বছরে বাংলাদেশ ইন্ডিয়া হয়ে যায়নি।

তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চুক্তির পর খালেদা জিয়া বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পর্যন্ত বাংলাদেশ থাকে কি না। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পর্যন্ত ইন্ডিয়া হয়ে যাবে। হয়েছে? বেগম জিয়া বলেছিলেন, আওয়ামী লীগে ভোট দিলে মসজিদে উলুধ্বনি হবে, আজান হবে না, হয়েছে?  তারা অবান্তর কথা বলে।

রিজার্ভ বেড়ে গেছে, রেমিট্যান্স বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মনে রাখবেন বঙ্গবন্ধু হত্যার পর শেখ হাসিনার মতো এতো সৎ, দক্ষ, পরিশ্রমী, কূটনৈতিক নেতা বাংলাদেশে একজনও আসেনি। বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন স্বাধীনতা, শেখ হাসিনা এসেছেন মুক্তি দেওয়ার জন্য। সেই মুক্তির সংগ্রাম বাংলাদেশে আজও চলছে। ২০৪১ সাল, তারপর ২১০০ সাল। শেখ হাসিনার টার্গেট অনেক লম্বা। আমরা তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ গড়ার লড়াই করে যাচ্ছি।

আলোচনা সভায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম, সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীব প্রমুখ।

 

শেয়ার করুন:

Recommended For You