নবদম্পতির বিষপান, স্ত্রীর পর স্বামীরও মৃত্যু

অবশেষে সাজেদুল-রিয়া দম্পতির প্রেমের পরিনতি শেষ হয়েছে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে। পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রেমের সম্পর্কের পর পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন সাজেদুল-রিয়া দম্পতি। তবে তাদের এ বিয়ে মেনে নেননি স্বজনরা। কটূক্তি করতেন তারা। এটি সহ্য করতে না পেরে একসঙ্গে বিষপান করেন নবদম্পতি।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে সাজেদুলের বাবা আজতব আলী জানান, তার ছেলের মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বাড়িতে আনার চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনায় রোববার রাতে মারা যান রিয়া খাতুন (১৯)। পরেরদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে নববধূর দাফন সম্পন্ন হয়। লোকজন গোরস্থানে থাকতেই খবর আসে স্বামী সাজেদুল ইসলাম (২১) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
এর আগে রোববার উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের চরগড়গড়ি গ্রামের আজতব প্রামাণিকের বাড়িতে সাজেদুল ও রিয়া বিষপান করেন। রিয়া সাহাপুর গ্রামের আজিজুলতলা এলাকার লেরু মোল্লার মেয়ে। সাজেদুল চরগড়গড়ি গ্রামের আজতব আলীর ছেলে।
সাজেদুলের স্বজনরা জানান, একমাস আগে ভালোবেসে পালিয়ে বিয়ে করেন সাজেদুল ইসলাম ও রিয়া খাতুন। ছেলের পরিবার এ বিয়ে মেনে নিলেও মেয়ের পরিবার মেনে নেয়নি।
এ অবস্থায় একমাস স্বামীর বাড়িতেই ছিলেন রিয়া। রোববার দুপুরে রিয়ার চাচিশাশুড়ি ভানু বেগম (রিয়ার সম্পর্কে নানি) সাজেদুলের বাড়িতে যান। সেখানে তিনি রিয়াকে নানা কথা শোনান এবং থুতু ফেলে বিদ্রুপ করেন।
সাজেদুল বাড়ি ফেরার পর এ বিষয়টি জানিয়ে রিয়া কান্নাকাটি করেন। অপমানে আবেগতাড়িত হয়ে দুজনে একসঙ্গে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। পরে সাজেদুল দোকান থেকে দুই বোতল কীটনাশক কিনে এনে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে বিষপান করেন।
বাড়ির লোকজন টের পেয়ে উদ্ধার করে প্রথমে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) ভর্তি করান। সেখানেই রোববার রিয়ার মৃত্যু হয়। রিয়াকে সোমবার রামেক থেকে এনে রাত সাড়ে ৯টার দিকে শ্বশুরবাড়ি এলাকার কবরস্থানে দাফনের সময় খবর আসে সাজেদুল মারা গেছেন।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, সোমবার রিয়ার দাফনের পরই সাজেদুল মারা যান। নবদম্পতির বিষপানে আত্মহত্যার কারণ জানার চেষ্টা চলছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেয়ার করুন:

Recommended For You