পটুয়াখালীতে কৃষি কর্মকতার ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় কাজ না করে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে ২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনিরুদ্ধ দাসের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কাছে একটি  লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। অভিযোগের বিষয়টি বৃহস্পতিবার(২৭ জুন) পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অনাবাদী পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙিনায় সবজি ও পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্প থেকে ৩৬ লাখ ২৪ হাজার ৩৫০ টাকা, কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ২৬ লাখ ৬১ হাজার ১১২ টাকা, পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্প থেকে ১০ লাখ ৮১ হাজার ৫০০ টাকা, বরিশাল-পটুয়াখালী-ভোলা-ঝালকাঠী-বরগুনা-মাদারীপুর ও শরীয়তপুর কৃষক উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ৪০ লাখ ৮০ হাজার ৮০০ টাকা, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে উন্নতমানের ধান, গম ও পাট বীজ উৎপাদন সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্প থেকে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ১০০ টাকা, তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প থেকে ৯ লাখ ৩০ হাজার ৮০০ টাকা, রাজস্ব প্রকল্প থেকে ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ৬০০ টাকা, সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প থেকে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা, প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারগ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেডিয়েশন ইন বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দকৃত ২৭ লাখ ৪৫ হাজার ৩১৮ টাকা, স্টেকহোল্ডার অ্যাগ্রিকালচারাল কমপিটিটিভনেস প্রকল্প (এসএসিপি) থেকে ২৯ লাখ ১০ হাজার ৪০০ টাকা এবং বাংলাদেশের চর এলাকায় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প থেকে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮০০ টাকার কাজ না করে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে মোট ২ কোটি ৪ লাখ ১৫ হাজার ২৯০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনিরুদ্ধ দাস।

জানা যায়, চলতি অর্থবছরে (২৩-২৪) কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না করে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে ২ কোটি ৪ লাখ ১৫ হাজার ২৯০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনিরুদ্ধ দাস। বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ মনগড়াভাবে পরিচালনা করেছেন তিনি। কৃষকের প্রশিক্ষণের নাস্তা, খাবার ও ভাতাদি, কৃষি উপকরণ ঠিকমতো প্রদান না করে বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সময়মত আউশ প্রণোদনা কার্যক্রম না করে ১ মাস পর কৃষকদের মাঝে সার ও বীজ বিতরণ করেন। নির্দিষ্ট সময় সার ও বীজ না পাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করেন অনিরুদ্ধ দাস।

এ ব্যাপারে বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনিরুদ্ধ দাস বলেন, প্রকল্পের কাজগুলো যথানিয়মে হয়েছে। এদিকে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী বলেন, আমার প্রতিবেদনে উল্লেখিত প্রকল্পের কোনো কাজই হয়নি।

 

শেয়ার করুন:

Recommended For You