আমাদেরকে প্রাণবন্ত ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে সকালের নাস্তা। দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা, নাস্তা না খেয়ে অফিসের জন্য ছোটা, এ যেনো আমাদের নিত্যদিনের অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। অনেকেই ঘুম থেকে ওঠে সকালে না খেয়ে দিনের অনেকটা সময় কাটিয়ে দেন। এই অভ্যেস ভবিষ্যতের জন্য কতটা ক্ষতির কারণ হতে পারে, সেটা আমাদের কল্পনারও বাইরে। অনেকেই ভাবেন সকালের নাশতা খেলে ওজন ভেড়ে যায়।
সকালের খাবার খেলে অতিরিক্ত ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আবার এটি শরীরের শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে এছাড়াও, নিয়মিত সকালের নাস্তা করলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদিও নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে অবশ্যই সেটি হতে হবে পুষ্টিকর। সকালের দিকে শরীরের বিপাকক্রিয়ার হার বেশি থাকে ফলে যা খাওয়া হয় তা হজম হয়ে যায়।
বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান শামছুন্নাহার নাহিদ বলেন, সকালের নাশতা হতে হবে যাকে বলে একদম ব্যালেন্স ডায়েট, যা থেকে ভিটামিন, চর্বি, খনিজ—সব আনুপাতিক হারে পাওয়া যাবে। পাশাপাশি সকালের নাশতা ঠিকমতো খাওয়া হলে দুপুর পর্যন্ত খিদে লাগবে না। অহেতুক আজেবাজে খাওয়াও বন্ধ হবে।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন
সকালের নাস্তায় প্রথমেই যা থাকতে হবে, তা হলো অ্যালকালাইন গ্রুপের খাদ্য, যার কাজ পাকস্থলীর অম্লীয় ভাব প্রশমিত করা। সেটা হতে পারে যেকোনো শর্করাজাতীয় খাবার; যেমন, ভাত, রুটি, নুডলস, ওটস ইত্যাদি। এগুলোর সঙ্গে এমন সবজি খেতে হবে, যেগুলো পানিসমৃদ্ধ, চিনির পরিমাণ কম এবং যেগুলো খেলে পেটে অ্যাসিড তৈরি হওয়ার ঝুঁকি কম। যেমন লাউ, পেঁপে, জালি, পটোল, আলু ইত্যাদি।
এছাড়াও সঙ্গে রাখতে হবে একটি আমিষের উৎস। সকালে প্রতিদিন ডিম খেতে পারেন। সকালে ডিমের যেকোনো একটি পদ খেয়ে নিন। সেদ্ধ হলে আরও ভালো, এতে কোনো তেল লাগে না। এমনকি সকালে ফল খেতে পারেন। ফলের রসের চেয়ে গোটা ফল খেলেই পুষ্টি পাবেন বেশি। আঁশসমৃদ্ধ ফল খেলে সহজে ক্ষুধাও পাবে না। সালাদ ড্রেসিং করতে পারেন টক দই দিয়ে।
জাপানের জার্নাল অফ হিউম্যান সায়েন্সেস অফ হেলথ-সোশ্যাল সার্ভিসেস-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে খালি পেটে থাকার কারণে বেশিরভাগ মানুষ ডিমেনশিয়া বা ভুলে যাওয়ার অসুখে ভুগছেন। ৫২৫ জন প্রাপ্তবয়স্ককে নিয়ে ছয় বছর ধরে চলা ওই গবেষনা বলছে, যারা সকালে নাস্তা না করে কাজে বের হন, তারা অন্যদের তুলনায় চার গুণ বেশি স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার অসুখে ভোগেন।
প্রতিদিন সকালে সঠিক সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের ফলে স্মৃতিশক্তি ভালো থাকার পাশাপাশি সুস্থ থাকবে শরীর ও মন, জানিয়েছেন পুষ্টিবিদরা।