দেশে ফিরে মনে হচ্ছে জান্নাত পেয়েছি: মিয়ানমার ফেরত যুবক

দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগ শেষে বাংলাদেশ এসে মা বাবা ভাই বোনদের কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মিয়ানমার ফেরত বাংলাদেশি যুবক মোবারক। মায়ের বুকে মাথা রেখে মুখ গুঁজে কান্না করছিলেন তিনি। তার মাও ছেলেকে কাছে পেয়ে অঝোরে কাঁদছে। এমন সময় দেশে ফিরে কেমন লাগছে জিজ্ঞেস করলে মোবারক বলেন, দেশে ফিরে মনে হচ্ছে জান্নাত ফিরে পেয়েছি।
রোববার (০৯ জুন) ১৩৪ জন বিজিপি ও সেনা সদস্য মিয়ানমার ফেরত গিয়েছে এবং মিয়ানমারে বন্দি থাকা ৪৫ বাংলাদেশি কারাভোগ শেষে দেশে ফিরে এসেছেন।
মোবারক কারাভোগ শেষে মিয়ানমার থেকে ফিরে আসা ৪৫ বাংলাদেশিদের মধ্যে একজন। মিয়ানমারে বন্দি হওয়াটর চিত্রটি তুলে ধরতে গিয়ে  জানান,  দালালদের খপ্পরে পড়ে ৪ লাখ টাকার কন্ট্রাক্টে সাগর পাড়ি দিয়ে মালেশিয়া যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ট্রলার নষ্ট  হয়ে ধরা পড়েন মিয়ানমার সেনাদের হাতে। এরপর থেকে দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগ করতে হয়েছে তাকে।
মোবারক জানান, টেকনাফের হায়দার আলী নামক এক দালালের সাথে কন্ট্রাক্টে সাগরপথে মালেশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমাতে গিয়ে মিয়ানমারে  বন্দি হন তিনি।
মোবারকের বাবা বলেন, আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শোকরিয়া,আমার ছেলেকে ফিরে পেয়েছি।  সরকারসহ প্রশাসনের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
মোবারক হোসেন রামুর গর্জনিয়া এলাকার বাসিন্দা। মোবারকের মতো অনেকেই দালালের খপ্পরে পড়ে মিয়ানমারে কারাবন্দি শেষে দেশে ফিরেছেন।
মিয়ানমার ফেরত বাংলাদেশি নাগরিক শাহজাহান জানান, অনেক কষ্টে ছিলাম,মারধর নির্যাতন করা হতো প্রতিদিন। গরম পানিতে  ডাল ঘুটে এবং কাঁচা মাছ দিয়ে দিনে দু’বেলা ভাত দিতো।। এমনকি ডালের মধ্যে থাকা পোকাগুলোও ভাতের মধ্যে থাকতো। কখনো কখনো শুধু সাদা ভাত দেওয়া হতো।
তিনি আরও জানান, ধর্মীয় কাজ করতে বাঁধা দিতো। কেউ যেন সাগরপথে বিদেশ পাড়ি যাওয়ার মতো এরকম ভুল আর না করে তাদের জন্য এ পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন বলে জানান তিনি।
শাহাজাহানের বাবা-মা না থাকলেও এদিন সকাল থেকে তার অপেক্ষায় ছিলো স্ত্রী ছেলে মেয়ে সহ তার শ্বশুর শাশুড়ী। বাবা-মায়ের অবর্তমানে তারাই বাবা-মায়ের দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানান তিনি।

Recommended For You