সরকারের ক্ষমতার সিকিউরিটি গার্ড বেনজীর ও আজিজ : রিজভী

বেনজীর আহমেদ ও আজিজ আহমেদরা সরকারের দখলদারিত্বের ক্ষমতার ‘সিকিউরিটি গার্ড’ বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের আজকের যে দখলদারিত্বের ক্ষমতা সেটার প্রহরী ও সিকিউরিটি গার্ড এই বেনজীর-আজিজরা। তাদের দম্ভে এবং তারা যে জনগণের ওপর দমন নীতি চালিয়েছে সেটা তো আজকে সর্বজনস্বীকৃত।

রোববার (৯ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ ও পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ দুর্নীতিবাজ রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

রিজভী বলেন, জাপানের অ্যাম্বাসেডর বলেছেন- রাতের অন্ধকারে ২০১৮ সালের নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচন কারা করেছে? এই আজিজ এবং বেনজীররা করেছেন।

তিনি বলেন, আগে কমপক্ষে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের একটা নৈতিকতার জায়গা থাকতো। কারণ তাদের আলাদাভাবে প্রশিক্ষণ হয়, সবকিছু হয়। কিন্তু এই আজিজ আহমেদ সেনাবাহিনীর প্রধান হন কী করে? এটাই তো বিস্ময়কর ব্যাপার।

বিএনপির এই নেতা বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন তাদেরকে কত ধমক ও হুমকি দিয়েছেন এই বেনজীর। তিনি তখন পুলিশের উদ্দেশ্য বলেছিলেন- অস্ত্র দেওয়া হয়েছে আপনাদেরকে কী হাডুডু খেলার জন্য। যদি ন্যূনতম মানবতাবোধ থাকতো, আইনের শাসন থাকতো সেই দিনই তো বেনজীর আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হতো। উনি প্রকাশ্যে এই দেশের নাগরিক ও বিরোধীদলের নেতাকর্মীদেরকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। তখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি কারণ অবৈধ ক্ষমতার তারা ছিল রক্ষক। আর এই রক্ষক হতে গিয়ে তারা যে কত ভক্ষণ করেছে সেটা এখন দেখা যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, এয়ারপোর্টে সব বিমান বন্ধ করে দিয়ে তিনি দেখা করতে গেলেন তার গুরুর কাছে। তিনি মনে করেন তার গুরুর সাথে দেখা করলেই হয়ে যাবে। আমাদের স্বাধীনতা আমাদের সার্বভৌমত্ব সবকিছু তিনি বিসর্জন করছেন, মাথা নীচু করেছেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন- বিশ্বে বর্তমান যে পরিস্থিতি সেই পরিস্থিতি অনুযায়ী জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। বাজেট সেইভাবে দিতে হয়েছে। বিশ্বের পরিস্থিতি কী? বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে কোথাও মুদ্রাস্ফীতি বাড়েনি। যুদ্ধের পরেও ইউরোপে মুদ্রাস্ফীতি হয়নি। আমেরিকায় বেকারত্বের সংখ্যা সবচাইতে কম।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, আপনার নিপীড়ন, গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যা, ক্রসফায়ারের ভয়ে গণমাধ্যমে কর্মী, রাজনৈতিক দল আপনাদের দুর্বৃত্তপনা আপনাদের লুণ্ঠন, জনগণের বিরুদ্ধে আক্রমণ করা এর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায়নি। একজন প্রখ্যাত সাংবাদিক বলেছেন, আমরা অনেক কিছুই জানতাম কিন্তু ভয়ের কারণে তা লিখতে সাহস পাইনি। কারণ, আমাদের পাশে সরকার থাকবে না সরকার থাকে বেনজীরদের পক্ষে, সরকার থাকে আজিজদের পাশে।

রিজভী বলেন, এত বড় একটি ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের ঘর উড়ে গেল মানুষের চাল উড়ে গেল, সুন্দরবনের হরিণ ভেসে গেল, দেড় লাখ বাড়িক-ঘর ধ্বংস হয়ে গেল কয়জন মন্ত্রী সেখানে গেছে? বাঁচাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী এত কথা বলেন কিন্তু প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদেরকে হত্যা করা হচ্ছে একটি প্রতিবাদ করতে পারেন না।

সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন— বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ।

শেয়ার করুন:

Recommended For You