সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে জুন পর্যন্ত আল্টিমেটাম বেঁধে দিয়েছেন তারা। এ সময়ের মধ্যে কোটা বাতিল করা না হলে সর্বাত্মক আন্দোলনে নামার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।
রোববার (৯ জুন) সকাল ১১টায় শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হন। পরে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন, প্রশাসনিক ভবন, উপাচার্য চত্বর ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ করেন তারা।
এসময় ‘কোটা প্রথা পুনর্বহাল, বাতিল চাই’সহ নানা স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। কোটা না মেধা? স্লোগানের উত্তরে ‘মেধা, মেধা’ বলে শিক্ষার্থীরা সমস্বরে স্লোগান দেন। কর্মসূচি শেষে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে ২০১৮ সালে ঘোষিত কোটা প্রথা বাতিলের পরিপত্র বহাল করতে আগামী জুন পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি মানা না হলে সর্বাত্মক আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
সমাবেশে শিক্ষার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দেখলাম। তিনি শিক্ষার্থীদের মন্ত্রী নন। যারা কোটার পক্ষে তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নিজেদের অক্ষমতা ঢাকার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ব্যবহার করবেন না।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফায়েজ বলেন, ছাত্রসমাজ মেধার ভিত্তিতে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিল। ২০২৪ সালে আমাদের সে স্বপ্ন ধূলিসাৎ করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা হাইকোর্টের রায় মানি না।
শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার বলেন, মেধাবীদের পিষ্ট করা হচ্ছে। আমি নারী হয়ে বলছি, আমার কোনো কোটার প্রয়োজন নেই।
লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মিরাজুল ইসলাম সোহান বলেন, এই বাংলাদেশের আবার কোটা কেন? মুক্তিযোদ্ধারা সাম্য নিশ্চিত করতে চেয়েছিল। আপনারা তাদের অবদানকে আপনারা প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না।
শিক্ষার্থী আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, এখানে দীর্ঘসময় কোটার বৈষম্য বহাল ছিল। শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের মাধ্যমে তা থেকে ছাত্রসমাজকে মুক্ত করেছিল। আদালতের বৈষম্যমূলক রায় শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না।
শিক্ষার্থী রিফাত রশিদ বলেন, আমাদের সংবিধানে সুযোগের সমতার কথা বলা হয়েছে। তা নিশ্চিত করতে হবে। আপনারা মেধাবীদের হাতে দেশ তুলে দিন। অধিকার আদায় না করে আমরা ফিরব না।