
বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নেপালে আটক সিয়ামকে নিয়ে গেছে কলকাতা পুলিশ। বাংলাদেশে গ্রেপ্তার তিনজন ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রয়োজনে ফের কলকাতা যাবে ডিবি পুলিশ।
শনিবার (৮ জুন) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, আনারের মেয়ে এবং পরিবার কলকাতায় যাবে। আমরা কথা বলছি, তারা শিগগিরই যাবেন বলে শুনেছি। কলকাতা পুলিশের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, তারা আনারের পরিবারের সদস্যদের নাম-নম্বর নিয়েছে। আশা করছি শিগগিরই তারা পরিবারের সদস্যদের ডাকবে। যদি তারা ডাকে, তাহলে ধরে নিতে হবে ডিএনএ টেস্টের জন্যই ডাকা হয়েছে।
তাদের ডিএনএ স্যাম্পলিং ঢাকায় করা সম্ভব কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মনে হয় তারা সেখানে গেলেই বিষয়টি স্বল্প সময়ে হবে।
ঝিনাইদহের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা একজনকে এনেছি, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখাইনি। তার কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শাহীন নেপালের কাঠমান্ডু-দুবাই হয়ে ইউএসএ চলে গেছেন। আমরা যখন ভারতে ছিলাম, তখন সেখানকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিটিং হয়েছে। তারাও বিষয়টি জানে। যেহেতু ঘটনাটি তাদের দেশে হয়েছে, তাই শাহীন তাদের দেশেও মোস্ট ওয়ান্টেড। তারাও এ বিষয়ে কাজ করছে।
আমরাও এনসিবিতে শাহীনের সকল তথ্য দিয়েছি। মনে হয় এনসিবি অলরেডি ইন্টারপোলকে বিষয়টি অবগত করেছে। বাংলাদেশে আমেরিকার দূতাবাসেও আমরা কথা বলবো, সবকিছু মিলিয়ে আমরা তাকে ফেরত আনতে চেষ্টা করছি। আমরা মনে করি, আনার হত্যার সঙ্গে যারা যেখানে যেভাবে জড়িত, প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।
নেপালে গ্রেপ্তার সিয়ামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিয়াম যেহেতু ভারতে মোস্ট ওয়ান্টেড এবং নেপালের সঙ্গে তাদের বন্দি বিনিময় চুক্তি আছে, সে হিসেবে ভারত তাকে নিয়ে গেছে। আনারকে হত্যার পর তার লাশ গুমের বিষয়টা জানে শুধু সিয়াম আর জিহাদ। দুইজনই যেহেতু তাদের হাতে আছে, মনে করি তাদেরকে নিয়ে একসঙ্গে অভিযান পরিচালনা করলে হয়তো ভালো রেজাল্ট পাবে। প্রয়োজনে আমরাও সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদ করবো।
ডিবি প্রধান বলেন, সিয়াম যে নেপালে আছে, আমরা ভারত থেকেই আমাদের এনসিবিকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। আমাদের এনসিবিও কাঠমান্ডুকে বলেছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা কাঠমান্ডু গিয়ে, বর্তমানে কাঠমান্ডুকে যে বিভিন্ন অপরাধের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, সে বিষয়ে নেপালে একাধিক মিটিং করেছি। সব তথ্য উপাত্ত আমরা নিয়ে এসেছি, মনে করি এটা আমাদের আমাদের অর্জন।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভারতীয় পুলিশও কাজ করছে। দুই দেশের তদন্ত কর্মকর্তারা পারস্পরিক সহায়তায় কাজ করছে। আমাদের হাতে গ্রেপ্তার তিনজনই আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজনকে ভারত চাইতে পারে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ভারত কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে, তাহলে আমাদের উর্ধ্বতনের সঙ্গে কথা বলবে। আমরা যদি মনে করি আমরাও উর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলে সেখানে গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ করবো।