রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের মামলায় খালাস পেলেন ইমরান খান

রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহ মেহমুদ কুরেশি।  আলোচিত এই মামলা থেকে সোমবার রাজধানী ইসলামাবাদের হাইকোর্ট (আইএইচসি) এক রায়ে তাদের দু’জনকে মুক্তি দিয়েছেন।

তবে এ রায়ের ফলে কারাগার থেকে বের হওয়ার সম্ভাবনা নেই ইমরান এবং কুরেশির। কেন তারা উভয়ই বর্তমানে কারাগারে আছেন। বর্তমানে তারা সাজা খাটছেন ৯ মে দাঙ্গায় উসকানি প্রদান মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে।এ মামলায় গত ৩০ জানুয়ারি ইমরান খান এবং শাহ মেহমুদ কুরেশিকে ১০ বছর কারাবাসের সাজা দিয়েছিলেন নিম্ন আদালত। পরে ওই রায় বাতিল চেয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করেন পিটিআইয়ের আইনজীবীরা।

সোমবার সেই আবেদনের ওপর শুনানি ছিল। শুনানি শেষে সংক্ষিপ্ত এক রায়ে ইমরান-কুরেশিকে মামলা থেকে মুক্তি দেন আইএসইচসির বিচারপতি আমের ফারুক এবং বিচারপতি মিয়াগুল হাসান আওরঙ্গজেবের সম্মিলিত বেঞ্চ।

ইমরানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তথ্য ফাঁস সংক্রান্ত বিতর্ক শুরু হয় ২০২২ সালের ২৭ মার্চ,  তার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানের প্রায় ২ সপ্তাহ আগে। ওই দিন একটি জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় একটি চিঠি দেখিয়ে ইমরান খান বলেছিলেন, তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা বাইরের দেশের সরকারের সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতেছেন এবং এই চিঠিতে তার প্রমাণ রয়েছে।

জনসভায় চিঠিটি পড়েননি ইমরান, কিংবা চিঠিতে কী রয়েছে-সে সম্পর্কিত কোনো ইঙ্গিতও দেননি।

ইমরান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন পিএমএলএনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং নওয়াজ শরিফের ছোটভাই শেহবাজ শরিফ। তিনিও দীর্ঘ সময় ব্যাপারটিতে গুরুত্ব দেননি।

কিন্তু ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয় চলতি বছর সেপ্টেম্বরে, ইমরান খান, পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মুহম্মদ কুরেশি এবং সেক্রেটারি জেনারেল আসাদ ওমরের দু’টি অডিও টেপ ফাঁসের পর। সেই অডিও টেপে এই তিনজনকে এই মর্মে আলোচনা করতে শোনা যায় যে, ওই চিঠিটি থেকে পিটিআই কীভাবে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে পারে।

তারপর ৩০ সেপ্টেম্বর তত্ত্বাবধায়ক মন্ত্রিসভা বিষয়টি তদন্তে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সিকে (এফআইএ) নির্দেশ দেয়। গত অক্টোবরে ইমরান ও কুরেশিকে অপরাধী সাব্যস্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয় এফআইএ।

সেই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ওই মাসেই এফআইএকে বিশেষ আদালতে ইমরান খানের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি দেয় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক মন্ত্রিসভা।

মামলা দায়েরের তিন মাস পর ৩০ জানুয়ারি ইমরান ও কুরেশিকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছর কারাবাসের সাজা দেন নিম্ন আদালত, যা আজ মওকুফ হলো।

 

সূত্র : রয়টার্স

শেয়ার করুন:

Recommended For You