সংসদ নির্বাচনও কয়েক ধাপে করতে চায় নির্বাচন কমিশন

সংসদ নির্বাচনও কয়েক ধাপে করতে চায় নির্বাচন কমিশন

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনও একাধিক দিনে ধাপে ধাপে করলে ব্যবস্থাপনা সহজ হবে বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

রোববার (২ জুন) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, তাহলে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা অনেক সহজ হয়ে যাবে। ভোটকেন্দ্রে অধিক সংখ্যক ফোর্স মোতায়েন সহজ হবে। মনিটরিংটা সহজ হবে। সিইসি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা (টিআইবি) বলেছে যে, আমাদের দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করছি না। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর আইনি সীমাবদ্ধতার কথা বলেছেন। টোটাল নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে কথা হয়েছে। নির্বাচনটা অংশগ্রহণমূলক হয়নি। তবে ফেয়ার হয়েছে। একটা দক্ষতার অভাব রয়েছে। সেটা তাঁরা জোর দিয়ে বলেছেন। আমরা বলেছি, আমাদের কাজ হচ্ছে নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ করা। আমরা বলেছি, সমস্যা অনেকটাই রাজনৈতিক। রাজনৈতিক সমস্যা নিরসন না হলে, নির্বাচন ব্যবস্থাটা স্টেবল হবে না। পলিটিক্যাল আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা হয়ে গেলে নির্বাচনটা আরও সুন্দর হতে পারে।

ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচন যদি পদ্ধতিগতভাবে যদি উন্নয়ন করা যায়, ব্যক্তির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে যেমন, একটা হচ্ছে ডিজিটাল ডিভাইস, আরেকটা হচ্ছে সিস্টেম অব ইলেকশন। আমরা বলেছি, তারাও বলেছেন, প্রপোরশনাল বলে একটা সিস্টেম আছে, আনুপাতিক হারে সংসদে প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা, যেটা আমাদের সংসদে নারী আসনের ক্ষেত্রে আছে। আমরা বলেছি, এগুলো নিয়ে আপনারা গবেষণা করতে পারেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে যদি আপনারা বলতে পারেন ক্ষমতা থেকেও নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ করা যায়, যায় কিনা সেটা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যদি কোনো গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব পাস করতে পারেন সংসদ থেকে তাহলেও যে আপনারা বলছেন জনগণ অংশ নিচ্ছেন না, এগুলোও কমে আসবে।

সিইসি বলেন, ইভিএম নিয়ে অনাস্থা ছিল, এখনো আছে। ইভিএমে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, আজ পর্যন্ত কেউ বলেনি যে এখানের ভোট ওখানে চলে গেছে। আমরা এখন অনেক স্পষ্ট, এই মেশিনে সেটা একেবারেই অসম্ভব। তবে ইভিএমটাকে আরও সহজ করা যেতে পারে। মানুষের যদি আস্থা ফিরে তবে ভিভি প্যাডটা যদি লাগিয়ে দেওয়া যায়, তবে এটা আমরা বলতে পারি না, যদি দলগুলো একমত হয়। তাহলে আমরাও এগ্রি করব। নির্বাচনটাও অধিক সুষ্ঠু হবে। আজকে না হলেও ১০ বছর পরে, ১০ হাজার বছর পরে হলেও এই সমস্ত প্রযুক্তি লাগবে। এটা আমরা বলেছি।

আরও পড়ুন : নতুন প্রজন্মকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করুন: রাষ্ট্রপতি

সীমিত সামর্থ্যে চেষ্টা করি জানিয়ে সিইসি বলেন, আমাদের যে অনন্ত সক্ষমতা আছে, সেটা মোটেই না। নির্বাচন কমিশন কখনো একা অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না, যদি না রাষ্ট্র এবং সরকারের পলিটিক্যাল উইল সপক্ষে থাকে। রাষ্ট্রের যদি পলিটিক্যাল উইল সপক্ষে থাকে তাহলে প্রশাসন, পুলিশ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে বাধ্য।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো কোনো আলাপ আলোচনা দেখছি না উল্লেখ করে সিইসি বলেন, তাদের মধ্যে বৈরিতা অত্যন্ত প্রকট। এত প্রকট বৈরিতা নিয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সিইসি নয়, এই প্রকট বৈরিতাটা রাখলে সামনে আগানো খুব কঠিন হবে। এই বৈরিতা পরিহার করে আলোচনার টেবিলে বসতে হবে। টিআইবিকে বলেছি, আপনাদের মতো আরও সিভিল সোসাইটি আছে, তারাও ভূমিকা পালন করতে পারেন। আমরা হয়তো আমাদের রিপোর্টে রেখে যাব, আমরা তো চলেই যাব, পরবর্তী কমিশন যেন করতে পারে।

বৈঠক শেষে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গত ৭ জানুয়ারি যে নির্বাচন হয়েছে সেটা প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হয়েছে বলেই ধারণ করা হয়। সেটা আমরাও মনে করি এবং সেটা আমাদের প্রতিবেদনেও আছে। তবে সেটা নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। সে ক্ষেত্রেও নির্বাচন কমিশন আমাদের সঙ্গে একমত, তারা বলেছে যথাসাধ্য মতো চেষ্টা করেছে।

 

শেয়ার করুন:

Recommended For You