তীব্র তাপদাহে পুড়ছে পাকিস্তান। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ সিন্ধের ঐতিহাসিক শহর মোহেঞ্জোদারোর তাপমাত্রা পৌঁছেছে ৫২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
গতকাল সোমবার মোহেঞ্জোদারোতে যে তাপাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, তা এখন পর্যন্ত চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। পাকিস্তানের আবহাওয়া দপ্তরের শীর্ষ নির্বাহী সরদার সরফরাজ এ তথ্য জানিয়েছেন। সিন্ধ প্রদেশের একটি ছোট শহর মোহেঞ্জোদারো। অসহনীয় গরম আর তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত সেখানকার জনজীবন।
মোহেঞ্জোদারো শহর এই উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন জনপদগুলোর মধ্যে একটি। সিন্ধু নদীর তীরবর্তী যেসব অঞ্চলে আজ থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার বছর আগে গড়ে উঠেছিল প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতা, সেই সভ্যতার অন্যতম কেন্দ্র ছিল মোহেঞ্জোদারো।
এই শহরের আবহাওয়া প্যাটার্ন হলো-গ্রীষ্মকালে ব্যাপক গরম, শীতকালে মৃদু শীত এবং নিম্ন বৃষ্টিপাত, অর্থাৎ প্রায় মরু আবহাওয়া। তবে ছোটো শহর হলেও এখনও মার্কেট, বেকারি, চায়ের দোকান, মেশিন-ইলেকট্রনিক্স মেরামতসহ বিভিন্ন দোকানে রীতিমতো সরগরম থাকে মোহেঞ্জোদারো।
শহরের একটি রেস্তোরাঁর মালিক ওয়াজিদ আলী বলেন, ‘লোকজন পারতপক্ষে ঘর থেকে বের হচ্ছে না। ফলে গত বেশ কয়েক দিন ধরে রেস্তোরাঁতেও খদ্দের আসছে না। রেস্তোরাঁ খুলে প্রতিদিন আমি আর আমার কর্মচারীরা অলস হয়ে বসে থাকি।’
অন্যদিকে মোহেঞ্জোদারোর স্থানীয় চিকিৎসক মুশতাক আহমেদের কথায়, ‘অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচতে মানুষজন খুব বেশি প্রয়োজন না থাকলে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। এরইমধ্যে আবার ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে প্রাণ যায় যায় অবস্থা।
পাকিস্তানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দৈনিক তাপমাত্রা রেকর্ড ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৭ সালে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। পাকিস্তানের সর্বোচ্চ দৈনিক তাপমাত্রার রেকর্ডের পাশাপাশি এটি এশিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ও বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা রুবিনা খুরশীদ আলম জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে যেসব দেশ নিয়মিত আবহাওয়াগত বিভিন্ন দুর্যোগের শিকার হচ্ছে, সেই সব দেশের তালিকায় পাকিস্তান রয়েছে পঞ্চম স্থানে।
খবর: রয়টার্স