১০ বছরের অপেক্ষা ঘুচিয়ে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন কলকাতা

১০ বছরের অপেক্ষা শেষে আইপিএলের চ্যাম্পিয়ন কলকাতা

এবারের আইপিএল টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি আলো ছড়ানো দুই দলই গিয়েছে ফাইনালে। তবে সেই তুলনায় খুব একটা উত্তাপ ছড়ালো না টুর্নামেন্টের সতেরোতম আসরের ফাইনাল।

মৌসুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এসে পুরোদমে খেই হারিয়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ২০১৪ সালে শেষবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। এবার প্রতিপক্ষের দুর্বলতার চেয়ে অনেক বেশি নিখুঁত ছিল কলকাতা। বোলিং-ব্যাটিং সবই আজ ছিল তাদেরই পক্ষে। একপেশে সেই ফাইনালে ৮ উইকেটের জয় কেকেআর শিবিরকে এনে দিল তাদের তৃতীয় আইপিএল শিরোপা। ২০১২ এবং ২০১৪ সালের পর আবার চ্যাম্পিয়ন হলো শাহরুখ খানের দল।

ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন      

ফাইনালে হায়দরাবাদের দেওয়া ১১৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে আগ্রাসী কলকাতাকে খেলতে হলো মোটে ১০.৩ ওভার। ভেঙ্কেটশ আইয়ারের আগ্রাসী অর্ধশতক আর রহমানউল্লাহ গুরবাজের সময়োপযোগী ইনিংসে সহজেই লক্ষ্যমাত্রা পেরিয়ে যায় চন্দ্রকান্ত পন্ডিতের শিষ্যরা। গুরবাজ দলীয় ১০২ রানে আউট হলেও দলকে ঠিকই জয়ের কাছে রেখে এসেছেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ভেঙ্কেটশের সঙ্গে তার ৯১ রানের জুটি নিশ্চিত করেছে কলকাতার জয়।

আর শেষটা করেছেন অধিনায়ক শ্রেয়াশ আইয়ার। ২৪ বলে ফিফটি করা ভেঙ্কেটশ অপরাজিত ছিলেন ৫২ রান করে। দলের জয়সূচক রানটাও এসেছে তারই ব্যাট থেকে। ১১৪ রানে প্রতিপক্ষকে থামাতে যেমন আগ্রাসী বোলিং দরকার ছিল, তার কিছুই দেখাতে পারেননি হায়দরাবাদের বোলাররা। ব্যাটিং ইউনিটের পর বোলিং ইউনিটও পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বড় ম্যাচে এসে। ভুবেনেশ্বর, প্যাট কামিন্স কিংবা থাঙ্গারাসু নটরাজনের কেউই স্বস্তি পাননি বোলিংয়ে এসে। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারেই কলকাতা স্কোরবোর্ডে তুলেছে অর্ধেকের বেশি রান। ১ উইকেট হারিয়ে ৭২ রান তোলে ওই ছয় ওভারেই। জয়ের জন্য বাকি ১৪ ওভারে তাদের দরকার ছিল ৪২ রান। সেই রানটাও এসেছে অনায়াসে। ওভারপ্রতি ১০ এর কাছাকাছি রান তুলে নিশ্চিত করেছে নিজেদের তৃতীয় শিরোপা।

অবশ্য কলকাতার জয়ের ভিত পুরোপুরি গড়ে দিয়েছিলেন বোলাররা। ফাইনালে এসেই যেন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। পুরো আসরেই নিজেদের ব্যাটিং দিয়ে প্রতিপক্ষ বোলারদের নাজেহাল করেছিল তারা। আর আজ দেখতে হলো একেবারেই উল্টো এক চিত্র। এবারের আসরে যে দলটি দুবার দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছিল, তারাই ফাইনালে কলকাতার পেসারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি।

শুরটা করেছিলেন মিচেল স্টার্ক। পরে সেটাই ধরে রেখেছেন আন্দ্রে রাসেল-হার্ষিত রানারা। রাসেল পেয়েছেন তিন উইকেট, বাকি দুজন শিকার করেছেন দুটি করে। অধিনায়ক প্যাট কামিন্স শেষদিকের লড়াইয়ে দলকে কিছুটা হলেও বলার মতো পুঁজি এনে দিয়েছেন। তার ৩০ রানের ইনিংসে ভর করেই ১১৩ রান দাঁড় করিয়েছে হায়দরাবাদ।

২৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে মিচেল স্টার্ককে কেন কিনেছিল কলকাতা, সেটা বোধকরি আজ আবার প্রমাণ পেলো ক্রিকেট দুনিয়া। রোববারের ফাইনালে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে একপ্রকার চালকের আসনেই বসিয়ে দিলেন এই অজি পেসার। পাওয়ারপ্লেতে কলকাতা তুলে নেয় তিন উইকেট। এরপর মার্করাম এবং নীরিত রেড্ডী কিছুটা আশা দেখিয়েছেন। দুজনের কাছ থেকে কিছুটা চার-ছয় দেখেছেন দর্শকরা।

কিন্তু দলীয় ৪৭ রানে তাদের জুটি ভাঙ্গেন হার্ষিত রানা। এবার তার কুইকার ডেলিভারিতে বিভ্রান্ত নীতিশ। বল ব্যাট ছুঁয়ে চলে যায় উইকেটের পেছনে গুরবাজের হাতে। এইডেন মার্করাম ফাইনালে ২০ রানে ফিরে যান। মাঝে বরুণ চক্রবর্তীর বলে শাহবাজ আর রাসেলের বলে ইম্প্যাক্ট হিসেবে নামা আব্দুস সামাদ আউট হলে দলীয় ১০০ পার হওয়া নিয়েই শঙ্কায় পড়ে যায় হায়দরাবাদ। সেখান থেকে তাদের পথ দেখান অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। জয়দেব উনাদকাটকে নিয়ে পার করেন দলীয় শতরান।

তবে আইপিএলের ফাইনালে সবচেয়ে কম রানের পুঁজি নিয়ে এমন দলের বিপক্ষে শিরোপা জেতা ছিল প্রায় অসম্ভব। হায়দরাবাদও পারেনি। কলকাতা নাইট রাইডার্স ঠিকই তুলে নেয় ৯ উইকেটের সহজ এক জয়।

 

Recommended For You